১. অতি সম্প্রতি দেশি-বিদেশি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী গ্রীস থেকে নির্বাসনের সম্মুখীন হয়েছেন। একারণে তারা আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন। সূত্র জানায়, ভূমধ্যসাগরীয় এ দেশটিতে প্রায় ৩০ হাজার বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী বসবাস করছেন, যাদের অধিকাংশই কৃষি খাতে নিয়োজিত। গ্রীসের সরকারি সূত্রাসারে, ৩০ হাজার কর্মীর মধ্যে প্রায় ১২ হাজার কর্মী ওয়ার্ক পারমিট পেয়েছেন এবং প্রায় ১৮ হাজার কর্মী কোনও আইনি নথি ছাড়াই কাজ করছেন। এই কারণে, এথেন্সের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ অনথিভুক্ত কর্মীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানো শুরু করেছে। তারা ফেরত পাঠানোর জন্য আরও অনথিভুক্ত অভিবাসীদের অনুসন্ধান ও আটক করার চেষ্টা করছে। এই ধরণের কর্মকা- অনথিভুক্ত অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে যারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে গ্রীস ও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখছেন।
২. এদিকে অভিবাসীদের স্বার্থরক্ষাকারী আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা বলছে অবৈধ ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি গ্রীস কর্তৃপক্ষ অনথিভুক্ত কর্মীদের আটক ও ফেরত পাঠানো শুরু করেছে। তারা বলছে, গ্রীস সরকার নতুনভাবে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ওই দেশে থাকা অভিবাসী কর্মীদের কোনভাবেই তার নিজ দেশে ফেরত পাঠানো উচিত নয়। কারণ তারা বেশ কয়েক বছর ধরে সততা ও কঠোর পরিশ্রমের সাথে এখানে কাজ করে গ্রীসের অর্থনীতিতে অবদান রেখে চলেছেন। অভিবাসী অধিকার ফোরাম এর গ্রীস চ্যাপ্টার বলছে, বিদেশি কর্মীরা গ্রীসের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে মহামারী চলাকালীন সময়েও কঠোর পরিশ্রম করেছে। তাদের অধিকাংশই গ্রীসের তরমুজ ও স্ট্রবেরি ক্ষেতে কাজ করছেন যা দেশটির প্রধান আর্থিক ফসল। এজন্য অভিবাসী অধিকার ফোরামের নেতারা এথেন্সের কাছে এই ধরণের পদক্ষেপ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।
৩. অভিবাসী কর্মীরা এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সহায়তা কামনা করেছেন। তারা বলছেন যে, তারা রেমিটেন্সযোদ্ধা। সরকারের উচিত তাদের স্বার্থ দেখা। আশার কথা প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেছেন, তিনি অভিবাসীদের ঢাকায় ফেরত না পাঠানোর জন্য গ্রীস কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন। যারা সেখানে সততার সাথে কাজ করছেন তাদের বৈধকরণ শুরু করার জন্য তিনি অনুরোধ করেছেন। এথেন্স তাদের সাথে এই মর্মে সম্মত হয়েছে যে, যেসকল বাংলাদেশি কর্মীরা ইতিমধ্যে গ্রীসে অবস্থান করছেন তাদের ওয়ার্ক পারমিট দিবেন।
৪. ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। মায়ের ভাষা মাতৃভাষার দাবিতে এদিন বুকের তাজা রক্ত ঝরিয়েছেন বাংলার দামাল ছেলে রফিক, জব্বার, সালাম বরকত সহ আরও অনেকে। দিনটি অর্জনে ভাষা সৈনিকদেরও অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে। আর এ দিনটিকে আন্তর্জাতীকীকরণে প্রভূত ভূমিকা রেখেছেন বিশিষ্ট প্রবাসী বাংলাদেশি রফিকুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম। তাদের সকলের কাছে আমরা ঋণী। শোকাচ্ছন্ন গৌরবের এই দিনে তাদের প্রতি রইলো অপরিসীম শ্রদ্ধা-ভালোবাসা।