হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: ইউরোপে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্তের ঘটনাগুলোতে নজর রাখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এবার যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের এক বাসিন্দা মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। ১৮ মে ২০২২, বুধবার দেশটির সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (সিডিসি) ও ম্যাসাচুসেটসের জনস্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তি সম্প্রতি কানাডা ভ্রমণে গিয়েছিলেন। তাকে এরই মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি ভালো অবস্থায় আছেন। কর্তৃপক্ষ আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে কারা কারা এসেছেন তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। তবে স্থানীয় জনস্বাস্থ্য বোর্ড বলছে, সাধারণ মানুষের কোনো ঝুঁকি নেই। সাধারণত শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এ বছরই যুক্তরাষ্ট্রে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী প্রথম দেখা গেছে। মাদ্রিদে এরই মধ্যে ২৩ জনের শরীরে এই ভাইরাস সংক্রমিত হলে সম্ভাব্য প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে স্প্যানিশ কর্তৃপক্ষ সতর্কতা জারি করে। আক্রান্তদের মধ্যে ৮ জন সমকামী পুরুষ রয়েছে। মাদ্রিদের আঞ্চলিক স্বাস্থ্য বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, মাদ্রিদে ভাইরাসটি ফ্লুইড কনটাক্টের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ইউরোপে শুধু স্পেনই নয়, লিসবন এবং আশেপাশের এলাকায় পর্তুগিজ যুবকদের মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার ২০টি সন্দেহভাজন ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। যুক্তরাজ্যেও মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত ৭ ব্যক্তি সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে ৪ জন সমকামী পুরুষ। দেশটিতে প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তি সম্প্রতি নাইজেরিয়ায় গিয়েছিলেন, ধারণা করা হচ্ছে সেখানেই তিনি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হন।
একসময় গুটি বসন্তে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষ মারা যেত। এই ভাইরাসটি ১৯৮০ সালে পুরোপুরি নির্মূল ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে চিকেন পক্স, এটিকে সাধারণত শৈশবের রোগ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। এতে আক্রান্ত হলে জ্বর, মাথাব্যথা, পেশি ব্যথা এবং শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। চিকেন পক্স পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য। কয়েক দিনের মধ্যেই আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে যায়।
বর্তমানে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়া মাঙ্কিপক্সের সঙ্গে গুটি বসন্ত ও চিকেন পক্স উভয়েরই মিল রয়েছে।
মাঙ্কিপক্সের দুটি রূপ রয়েছে। একটি পশ্চিম আফ্রিকান স্ট্রেন এবং অপরটি মধ্য আফ্রিকান স্ট্রেন। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত ব্যক্তির মাঙ্কিপক্স হালকা ওয়েস্ট আফ্রিকান স্ট্রেনের।
এর আগে গত বছরও যুক্তরাষ্ট্রে দুজন মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়, এই দুজনই সে সময় নাইজেরিয়া ঘুরতে গিয়েছিলেন।তবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া কঠিন। এর সংক্রমণ সাধারণত ফ্লুইড ট্রান্সফার, ঘা, দূষিত পোশাক বা দীর্ঘস্থায়ী মুখোমুখি যোগাযোগ কিংবা সহাবস্থানের মাধ্যমে ঘটে, যা শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়।