রাসেল আহমেদ, প্যারি, ফ্রান্স থেকে: ফ্রান্সের প্যারিসের বাস্তিল এলাকায় ভিনদেশী সন্ত্রাসীদের হামলায় ১ বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছে। নিহত যুবক হলেন বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার সোহেল রানা। গত শক্রবার ভোর রাতে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে ৪ কৃষ্ণবর্নের ভিনদেশি সন্ত্রাসির হামলার শিকার হন সোহেল রানা। সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহতবস্তায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে পথচারীরা পুলিশকে খবর দিলে পরে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। ২৫ মে ২০২২, বৃহস্পতিবার ৭টায় প্যারিসের একটি হাসপাতালে সোহেল রানা মারা যান। পুলিশ এই ব্যাপারে তদন্ত করছে। এ ঘটনা জানতে পেরে বাংলাদেশ দুতাবাসের ২ জন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফরাসি কাউন্সিলর রাব্বানী খান ছুটে যান নিহতের বাসায়। নিহতের পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করে গভীর সমবেদনা জানান।
বাংলাদেশ দুতাবাসের দূতালয় প্রধান খালিদ বিন ওয়ালিদ জানান, ঘটনা জানার পর পরই রাষ্ট্রদূত এম তালহার নির্দেশে তারা নিহতের বাসায় গিয়ে সদস্যদের খোঁজ খবর নেন। এবং দুতাবাস থেকে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। নিহত সোহেল রানার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করেছেন। বাংলাদেশ দুতাবাস থেকে আগামি শুক্রবার ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লিখিত ভাবে এই ঘটনার সুষ্টু তদন্ত এবং বিচার চেয়ে চিঠি দেয়া হবে।জানা যায়, গত শনিবার প্যারিসের বাস্তিলে ডিসকো ক্লাবে ভোর ৫টায় কাজ শেষে অন্য কলিগদের সাথে খাবার খেতে গলির ভেতর একটি রেস্টুরেন্টে যান সোহেল রানা। নিজে খেয়ে সন্তানের জন্যও একটি পিজা নেন। সবাই যার যার পথে চলে যাবার পর তিনিও বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হতেই কয়েকজন কৃষ্ণাঙ্গ যুবক তার পথ রোধ করে বোতল দিয়ে মাথা আঘাত করে এলোপাথারি লাথি মেরে অজ্ঞার করে ফেলে। পাশেই সোহেলের পরিচিতি এক রেস্টুরেন্ট মালিক সোহেল কে চিনতে পেরে পুলিশে খবর দিয়ে তাকে উদ্ধার করে। অবশেষে ৪ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে ২৫ মে ২০২২, বৃহস্পতিবার ৭টায় সোহেল মারা যান। তার এক নিকটাত্মীয়ের সাথে কথা বলে জানা যায় সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মমভাবে মেরে আহত করলেও তার ফোন ও সাথে থাকা অন্যান্য জিনিস অক্ষত ছিল। মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার নিবাসী সোহেল রানা গত ১১ বছর যাবত প্যারিসে বসবাস করছেন। ৪ বছর আগে তিনি স্ত্রীকে প্যারিসে আনেন। তাদের প্রায় তিন বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। পরিবার নিয়ে তিনি ফোর্ট দা অভারভিলায় বসবাস করতেন। সোহেলের মৃত্যুতে প্যারিসে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে আসে।