আখি সীমা কাওসার, রোম, ইতালি প্রতিনিধি: ইউরোপের দেশ গ্রীসে অবৈধভাবে যাওয়ার পথে তুরস্কের সীমান্তে বরফের পাহাড়ে আটকা পড়ে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের শামায়ুন নামে এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার ১৭ ডিসেম্বর মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে নিহতের পরিবার। তবে কবে নাগাদ শামায়ুনের মরদেহ দেশে আনা হবে এ ব্যাপারে কিছুই জানাতে পারেনি তার পরিবার।
জানা যায়, বানিয়াচং সদর ২নং উত্তর পশ্চিম ইউনিয়নের গরীব হোসেন মহল্লার মো. মতলিব উল্লাহর ছেলে শামায়ুন বানিয়াচং সরকারী জনাব আলী কলেজে বিএ ৩য় বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন। গ্রীসে যাওয়ার লক্ষ নিয়ে আনুমানিক আড়াই মাস আগে পূর্বে ইরানে যায় সে। সেখানে দীর্ঘদিন অবস্থান করার পর সেখানকার দালালের মাধ্যমে প্রায় ২৫/৩০ জন সঙ্গী নিয়ে গ্রীস যাওয়ার জন্য পাড়ি জমায় শামায়ুন। এক পর্যায়ে সোমবার তুরস্কের সীমান্তে পৌঁছার পর সাগরপাড়ে বরফ ধসে প্রাণ হারায় শামায়ুন। পরে সেখানে তার সাথে থেকে সহপাঠীরা পরিবারের কাছে এ খবর দিলে শামায়ুনের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা বাকরূদ্ধ হয়ে পড়েছেন। পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
এদিকে তার এলাকার স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ইতোপূর্বে শামায়ুন আরো একবার তুরস্ক সীমান্ত হয়ে ইউরোপে যেতে না পেরে দেশে ফেরত আসেন। নিহত শামায়ুনের এক ভাই বর্তমানে ফ্রান্সে অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশিরা অবৈধভাবে পৃথিবীর অনেক দেশেই যায়, তার মধ্যে ইউরোপের দেশগুলোতে বেশী আসে। এই আসা যে এত সুখের নয় তা শামায়ুন পরিণতি তেখলেই বুঝা যায়। জীবনের বাজী রেখে সংসার পরিবারের সুখ সমৃদ্ধির জন্য বিপদ জেনেও অবৈধ পথে স্বপ্নের দেশে পাড়ি জমান।
আমরা কি আদৌ সঠিক হিসাব জানি? জানে কি আমাদের দূতাবাসগুলো? জানে কি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়? না এই হিসাব কারো কাছে নেই। অবৈধভাবে বিদেশে আসা কোনভাবেই কমছে না, প্রতিনিয়ত ইউরোপের দেশগুলোতে অবৈধ অভিবাসী যেমন বাড়ছে, তেমন মৃত্যুর মিছিলও দিন দিন বাড়ছে। পরিবারের সদস্য, আত্মীয় স্বজন এবং সরকারের কঠিন হস্তক্ষেপে হয়তো অবৈধ পথে বিদেশে যাওয়া বন্ধ না হলেও কমবে অবশ্যই।