আখি সীমা কাওসার, রোম, ইতালি প্রতিনিধি: ইতালিতে ২৯ মার্চ ২০২৩ শ্রম মন্ত্রণালয়ের গেজেট ও মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যারা Permesso di soggiorno (ফেরমেসসো দি সৌজরন্য) ছাড়া অবৈধভাবে আছেন অর্থাৎ ইতালিতে থাকার জন্য, বৈধ কাজ করবার জন্য কোন ডকুমেন্টস নেই; ঠিক তাদেরকেই বৈধতা দিতে সরকারি মন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনা পর্যালোচনা চলছে। তাদের জন্য পরবর্তী ফ্লুস্সির নতুন ডেক্রেততে বৈধ হওয়ার সুযোগ থাকতে পারে। নতুন করে সানাতরিয়ার ডিক্লেয়ারেশন আসতে পারে।
মন্ত্রণালয়ের ওয়েব পেজ থেকে জানা গেছে, এই খবরে এখন থেকেই দালালচক্র বিভিন্ন তৎপরতা চালাচ্ছে। বেশি টাকার বিনিময়ে কিভাবে অবৈধদেরকে কালেকশন করে বৈধতার কাগজপত্রের লোভে ফেলে ঠকানো যায়। বিশেষ মহল মনে করে ভিতরে যেসব বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসী আছে তাদেরকে অবশ্যই সতর্কতার সহিত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তাই এই সংবাদে ইতালির ভিতরে বিশেষ করে বাংলাদেশী অবৈধ যারা আছেন তারা অবশ্যই ভেবে চিন্তে মালিকপক্ষ খুঁজে নিবেন অথবা সরকারের ডিক্লারেশন অনুযায়ী ফেরমেসসো দি সৌজরন্য (Permesso di soggiorno) পাওয়ার চেষ্টা করবেন।

ইতালিতে যেসব অভিবাসী লিগ্যাল ডকুমেন্টস ছাড়া আছেন ইতালির সরকার চিন্তা ভাবনা করছে তাদেরকে বৈধতা দিবার জন্য। ইতালির মন্ত্রী পরিষদের এক বৈঠকে প্রস্তাব এসেছে অতিদ্রুত মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সময় ও তারিখ ধার্য করা হবে।
গত কয়েক বছর থেকেই ইতালিতে অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতালি মানবিক দেশ হওয়ার কারণে অবৈধ অভিবাসীদের কাছে সর্বপ্রথম পছন্দের দেশ। এইসব অবৈধ অভিবাসীরা বৈধতার কাগজপত্র ‘ফেরমেসসো দি সৌজরন্য’ না থাকার কারণে কন্ট্রাক্টের কোন কাজ পায়না। জীবিকার তাড়নায় নিজ দেশে পরিবারকে ভালো রাখার জন্য তাদেরকে বিভিন্ন স্থানে অনেক রকম কাজ (Nero) কাজ করতে হয়। যেমন বিভিন্ন মার্কেটের সামনে হকারী, রাস্তায় গাড়ি পরিস্কারের কাজ, পেট্রোল পাম্পে কাজ, আরো অনেক রকম ছোটখাটো কাজগুলো ঝুঁকি নিয়ে করে থাকেন।
অথচ বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, সুপার শপ, মার্কেট ম্যাগাজিন ইত্যাদিতে অন্যান্য ব্যবসায় প্রচুর কর্মীর প্রয়োজন ইতালিতে। অবৈধভাবে থাকার কারণে মালিকপক্ষ Contract ছাড়া কাজ দিতে পারেনা তাদেরকে। কোন অবৈধ লোককে কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ দিলে যদি কন্ট্রোলে এসে ধরা পড়ে, তাহলে বিরাট অংকের জরিমানা গুণতে হয় মালিকপক্ষকে।

তাই বিভিন্ন মিল ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠানের চাপের মুখে আছে সরকার কয়েক বছর থেকেই। যেহেতু সামনে সিজনাল ব্যবসার মৌসুম, শীত কমতে শুরু করেছে। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই মোটামুটি বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর টুরিস্ট আসা শুরু করবে পর্যটন স্পটগুলোতে। তাই ব্যবসা-বাণিজ্য জঁমজমাট হওয়া শুরু করে তখন থেকেই। এমনিতেই করোনার পর থেকে ইতালির অর্থনৈতিক অবস্থা তেমন একটা ভালো নয়। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক মিলকারখানা। অর্থনৈতিক অবস্থা মুখ থুবরে পড়েছে। বর্তমান মেলনী সরকার নানা রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে কিভাবে ইতালির অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানো যায়। সেই চিন্তা ভাবনা থেকেই ইতালির ভিতরে যেসব অবৈধ অভিবাসী আছে, তাদেরকে শীঘ্রই বৈধতা দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে ইতালির সরকার। অর্থাৎ ইতালির ভিতরে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য মাইল ফলক শুভ সূচনা হতে চলেছে।