প্রবাস মেলা ডেস্ক: দেশে চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, ধর্মীয় উগ্রবাদের উত্থান এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে ধ্বংসের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে একটি ন্যায্য, মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বিনির্মাণে জাতীয় কবিতা পরিষদ ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারাবদ্ধ। এই উদ্দেশ্যেই সংগঠনটি দেশের বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে সোমবার বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ সভার আয়োজন করে।
দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় অংশ নেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান, সাধারণ সম্পাদক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, উপদেষ্টা কবি মতিন বৈরাগী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবি শ্যামল জাকারিয়া, জনসংযোগ সম্পাদক কবি রফিক হাসান, সহ-সভাপতি গোলাম শফিক, এবিএম সোহেল রশিদসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, কেন্দ্রীয় সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক, মীর রেজাউল আলম, আকবর খান, আবু হাসান টিপু ও বাবর চৌধুরী প্রমুখ।
সভায় বক্তারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক চর্চা, সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য ও জাতির মানবিক চেতনার পুনর্জাগরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, সমাজে বহুস্বর, সহনশীলতা ও প্রগতিশীলতার চর্চা অব্যাহত রাখতে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক শক্তিগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া জরুরি।
বক্তব্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “কবিরা না থাকলে এই পৃথিবী বাসযোগ্য হতো না। সমাজের সংকটে তারাই প্রথম সাড়া দেন। আজ দেশে এক ধরনের আধা-নৈরাজ্যিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিচার ব্যবস্থাকে প্রতিহিংসার হাতিয়ার বানানো হচ্ছে। সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ, রোহিঙ্গা সংকটসহ জাতীয় নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার যদি জনগণের মঙ্গল বাদ দিয়ে নতুন এজেন্ডা খোঁজে, তবে জনগণের শক্তি তাদের পাশে থাকবে না।”
জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান বলেন, “ধর্মীয় উগ্রতা ও সাংস্কৃতিক দমননীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তেই আমরা এই মতবিনিময় সভাগুলো করছি। কবিতা ও রাজনীতি—দুটি শক্তিই সমাজ পরিবর্তনের নিয়ামক। তাই জাতীয় কবিতা পরিষদ বৃহৎ গণঐক্য গঠনে দায়িত্ব পালন করে যাবে।”
পরিষদের উপদেষ্টা কবি মতিন বৈরাগী বলেন, “কবিরা জাতির সংকটে জীবন দিতে পিছপা হন না। তাঁদের হাত ধরেই দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কবি নুরুন্নবী সোহেল, কবি ইউসুফ রেজা, কবি আসাদ কাজল, কবি রোকন জহুর, কবি শিমুল পারভিন, কবি সবুজ মনির, কবি নাহিদ হাসান, কবি তাসকিনা ইয়াসমিনসহ অনেকেই।
সভা শেষে উভয় সংগঠন একটি মানবিক ও সাংস্কৃতিক রাষ্ট্র গঠনে যৌথভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে।