প্রবাস মেলা ডেস্ক: “সব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে হবে—এমন কোনো কথা নেই, তবে কিছু মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্য অত্যাবশ্যক” বলে মনে করেন মেক্সিকোয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী। তিনি সতর্কতা দিয়ে বলেছেন, নিজেদের এবং দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ যেনো আবার অন্ধকারে নিমজ্জিত না হয়।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে মুশফিকুল এ কথা বলেন।
তিনি ২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট শেয়ার করে লেখেন, “মনে পড়ছে নিউইয়র্ক টাইমসে মাত্র দুই বছর আগে প্রকাশিত সেই মর্মস্পর্শী প্রতিবেদন— ‘বাংলাদেশে নীরবে গণতন্ত্রকে পিষে ফেলা: বিচারাধীন লাখো মানুষ’!”
“প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছিল, কিভাবে দেশের প্রধান বিরোধী দলের নেতারা হাজারও মামলার বোঝা বয়ে কোর্টের বারান্দায় রাত্রিযাপন করছিলেন, কিভাবে নির্বাচন সামনে রেখে গোটা বিরোধী শিবিরকে পক্ষাঘাতে পরিণত করা হচ্ছিল। স্মৃতি ঝালাই করতে চাইলে পড়ুন কমেন্ট সেকশন থেকে।”
রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল বলেন, “দেশ চালানোর আকাঙ্ক্ষা অপরাধ নয়—বরং থাকা উচিত। কিন্তু তা অতীতের নির্মম অভিজ্ঞতা আর নেতা-কর্মীদের ত্যাগ ভুলে নয়। এক ভয়ংকর দানব এখনো পেছনে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। সুযোগ পেলেই ছোবল দিতে প্রস্তুত। এই দানবের বিরুদ্ধে এই দেশেই আমরা দেখেছি ইস্পাত-কঠিন ঐক্য। রাস্তায়, কারাগারে, মঞ্চে, বক্তৃতা-বিবৃতিতে—সবাই একে অপরের দুঃখ ভাগ করেছেন, একই স্টেজ শেয়ার করেছেন, গণমানুষের জমায়েতে মাইক্রোফোন তুলে দিয়েছেন। ধানের শীষ একসময় হয়ে উঠেছিল সার্বজনীন প্রতীক।”
“একবার অন্তত ভাবুন সেই গুম-খুনের ভয়াবহ সময়, ফাঁসির মঞ্চে নেতাদের নির্মম প্রাণ বিসর্জন, ছাত্র-জনতার বুক পেতে গুলির মুখে দাঁড়ানো সেই সাহস। যে নেতৃত্বের মাধ্যমে ঐক্য গড়ে তুলে বিগত দেড় দশক শেখ হাসিনা-বিরোধী আন্দোলনে লড়েছেন, সেই ঐক্য কিংবা নেতৃত্ব কেন দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারবে না?”
“তবে অবশ্যই প্রধান রাজনৈতিক দলকে দেশের অভিভাবকত্ব লাভের আগে রাজনৈতিক অভিভাবকত্ব গ্রহণে আগের মতোই পারস্পরিক সমঝোতা অটুট রাখা জরুরি।”
দেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর দিকে ইঙ্গিত করে মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, “সব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে হবে—এমন কোনো কথা নেই, তবে কিছু মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্য অত্যাবশ্যক। যারা ভাবতে পারেন, তারা ভাবুন। নিজেদের এবং দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ যেনো আবার অন্ধকারে নিমজ্জিত না হয়।”