জাহাঙ্গীর আলম সিকদার, লন্ডন, যুক্তরাজ্য: শরীয়তপুর ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন ইউকের উদ্যোগে ২৯ জুলাই ২০১৮ রবিবার পূর্ব লন্ডন চার্চিল কলেজে আলোচনা সভা ও বনভোজন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এসোসিয়েশনের সকল কার্যকরী পরিষদ, উপদেষ্টা পরিষদ এবং সাধারণ সদস্যদের উপস্থিতি ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠনের লোকজন এর ব্যাপক উপস্থিতি ছিল ।
বক্তাদের বক্তৃতায় বলেন, কথা ছিল গ্রীষ্মকালিন ছুটিতে এই আয়োজন হবে দূর কোথাও খোলা আকাশের নীচে দুবলা ঘেরা মাঠের উপর অথবা সমুদ্র সৈকতে পরিবার পরিজনদের একে অপরের সাথে দেখা ও সৌজন্য সাক্ষাত হবে কিন্তু বিধি বাম, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে শরিয়তপুরের নড়িয়া, জাজিরা, সুরেসসর এ পদ্মার সর্বনাশী করাল গ্রাসে বাড়িঘর ভেঙ্গে যাওয়ায় সর্বমতে অনুষ্ঠিত হয়েছে পূর্ব লন্ডনের চার্চিল কলেজ প্রাঙ্গণে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার ওয়ালিউল ইসলাম অলির তত্ত্বাবধানে এক মানবতার অংশীদার কিংবা আঞ্চলিকতার দাবিদার হিসাবে ।
অনুষ্ঠানের স্লোগান ছিল ধ্বংস হওয়া নড়িয়া, জাজীড়া, শরীয়তপুর বাঁচাও, বাঁচাও দেশের দক্ষিণাঞ্চল । তাছাড়া পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্রুত নদী ভাঙ্গন রোধে বাধ নির্মানের দাবী, বেড়ীবাঁধের জন্য মানব বন্ধন এবং প্রধানমন্ত্রীর বরাবর একটি স্মারক লিপি বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে পাঠানো। লাকিত ঊল্লাহ উকিলেরে সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালামের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি বৃহত্তর ফরিদপুর ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিস্টার ওয়ালীঊল ইসলাম এর উপস্থিতিতে বক্তৃতা প্রদান করেন এসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা জনাব মীনহাজ বেপারী, বাবুল মোল্লাহ, নজরুল ইসলাম, শাহালম, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবীবুর রহমান, অল ইউরোপিয়ান ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি মেজবাঊদ্দিন বাবু সহ বিভিন্ন নেতৃস্থানীয় অনেকে ।
এ ছাড়াও নিউহাম বাংলাদেশি এসোসিয়েশনের সভাপতি একাউনটেন্ট রাব্বির হোসেন, অল ইউরোপিয়ান সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও স্বদেশ বিদেশ পত্রিকার সম্পাদক ইকবাল হাসান এবং মাদারীপুর সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার কামাল হোসেন সহ বিভিন্ন সমিতির ও সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতি ছিল স্বতঃস্ফূর্ততা । 

বক্তারা নদী ভাঙ্গনের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানান, কেননা নদী ভাঙ্গনের এই হুমকিতে গত ২ বছরে গৃহহীন হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি, নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর, পাঁচগাও, চরজুজিরা, সাধুর বাজার, ওয়াপদা বাজার, ওয়াপদা লঞ্চঘাট, বুন্নাগ্রাম সহ আশেপাশের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় ইতিমধ্যে গত ২ সপ্তাহ যাবৎ পদ্মা নদীতে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।
উপজেলার অন্তত ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১৫টি মসজিদ মাদ্রাসা, ৩টি বাজারের অন্তত তিন শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমের শেষ সময়ে এসেও নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে নড়িয়ার পদ্মা তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায়। ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেক্স, নড়িয় পৌর ভবন, নড়িয়া বাজার সহ বহু স্থাপনা। নদীর ভয়াবহ গর্জনে এলাকার সকল পরিবারের নারী ও শিশুরা ডাক চিৎকার দিয়ে তারা ঘরের বাইেের নেমে আসে। নদী ভাঙ্গনের বেগতিক অবস্থা দেখে নারী ও পুরুষরা মিলে তাদের ঘর দরজা ভাঙ্গতে শুরু করে। সারা রাত ধরে কম পক্ষে দুই শতাধিক পরিবার তাদের ঘর বাড়ি ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নেয়।
শেষে খাওয়া দাওয়া ছাড়াও শিকড়ের টানে ছিল দেশীয় সামাজিক ইমেজ আর ভালোলাগার বন্ধন এবং ছোট ও বড়দের ছিল বিভিন্ন রকমের খেলাধুলা পুরস্কার এবং র্যাফেল ড্র কবিতা, গান, ও খেলাধুলার এক মনোমুগ্ধ পরিবেশ বাঙ্গালীয়ানা একই রঙের শাড়ি পরে উপচে পরা আনন্দে হাতে হাত রেখে মিলিয়ে দিয়েছিল এক বাংলার মুখরিত পরিবেশ যেন জন্মভূমি ছোট এক বাংলাদেশ ছোট এই চার্চিল কলেজে ।