প্রবাস মেলা ডেস্ক: ২৪ মে ২০২২, মঙ্গলবার পাক্ষিক প্রবাস মেলা অফিসে অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী সুলতানা চৌধুরী ও ফারিয়া চৌধুরী। এসময় তারা প্রবাস মেলা’র কলাকুশীলবদের সাথে আড্ডায়-আলোচনায় অংশ নিয়ে তাদের শিল্প চর্চা এবং পেশাগত জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন।
সুলতানা চৌধুরী: ছোটবেলা থেকেই সুলতানা চৌধুরীর গানে হাতেখড়ি। মেট্রিকে (বর্তমান এসএসসি) মিউজিকের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা দিতে ঢাকায় আসেন। সেখানে বিচারকদের মধ্যে একজন ছিলেন বাংলাদেশ বেতারের তৎকালীন মূখ্য প্রডিউসার আব্দুল আহাদ। এরই সূত্র ধরে তিনি পরীক্ষার পর একদিন বাংলাদেশ বেতারে আসলেন। তার অডিশন নেয়া হলো। এরপর থেকে বাংলাদেশ বেতারে নিয়মিত তার গান অন এয়ার হতো। সুলতানা চৌধুরীর কিছু অ্যালবাম বের হয়েছে। সিনেমাতেও তিনি কিছু কালজয়ী গান করেছেন। ভারতের বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী উদিত নারায়ণ এর সাথে ‘কখনো কি আয়নায় মুখ দেখোনি’ ডুয়েট গানটি করে তিনি বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
জীবনে পাওয়া-না পাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জীবনে কি পেয়েছি না পেয়েছি সেটা বড় কথা নয়, তবে গান আমাকে সব সময় স্বতঃস্ফূর্ত রাখে।’ মাঝে দীর্ঘ সময় সংসার, ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার জন্য গানে কিছুটা বিরতিতে থাকলেও ভবিষ্যতে তিনি নিয়মিত গান করবেন বলে জানিয়েছেন। সুলতানা চৌধুরী একজন ভ্রমণ পিপাসু ব্যক্তি। তিনি ব্যক্তিগত ও পেশাগত কাজে অনেক দেশ ঘুরেছেন। প্রবাসীদের প্রাণের সংগঠন ফোবানা সম্মেলনেও তিনি গান পরিবেশন করেছেন। তিনি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ইতালি, হংকং সহ আরও বহু দেশ ভ্রমণ করেছেন।
ফারিয়া চৌধুরী: ফারিয়া চৌধুরীর স্কুল জীবন দেশে কাটলেও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় কেটেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভারর্সিটি থেকে তিনি ইকোনোমিক্স এন্ড ম্যাথমেটিক্সে স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স এন্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স থেকে মাস্টার্স করেছেন ফারিয়া। এরপর জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থায় তার ক্যারিয়ার শুরু হয়। সেখানে গত প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি বিভিন্ন প্রকল্পে কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করছেন। বর্তমানে তিনি দ্বীপরাষ্ট্র ফিজিতে সংস্থাটির অধীনে হেড অব পার্টনারশীপ হিসেবে কাজ করছেন। এর আগে তিনি এই সংস্থার সদর দপ্তর রোমসহ তুরস্ক, দিল্লি, ব্যাংকক, হংকং এবং ইরাকে কাজ করেছেন।
সংস্কৃতি কর্মকাণ্ডে ফারিয়া: ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতিক পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন ফারিয়া। তার মা সুলতানা চৌধুরীর অনুপ্রেরণায় দেশে থাকতে নিয়মিত গান করতেন। তিনি নাটক, বিজ্ঞাপনেও কাজ করেছেন। স্টারশীপ কনডেন্স মিল্ক বিজ্ঞাপনে কাজ করে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন। বিশিষ্ট টিভি অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ ও তৌকীর আহমেদের সাথে বেশকিছু নাটকেও কাজ করেছেন ফারিয়া। বাংলা, হিন্দি, তুর্কি এবং ইংলিশে গান করেন ফারিয়া। তুর্কি ভাষায় তার একটি অ্যালবামও প্রকাশিত হয়েছে। ফারিয়া নিজেও গান লিখেন। সম্প্রতি তার নিজের লেখা একটি গান সংগীতশিল্পী বালামের সাথে গেয়েছেন। এটি শিগগিরই প্রকাশিত হবে বলে জানিয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ফারিয়া জানান, কয়েক মাস আগে দুবাই এক্সপোতে ভারতীয় সঙ্গীত পরিচালক এ আর রহমানের সাথে তিনি শো করেছেন। ভারতীয় অস্কার বিজয়ী এই গায়কের সাথে ফারিয়া ইসলামিক ওয়ার্ল্ডে মিউজিকের কি ভূমিকা এ সংক্রান্ত কিছু রিসার্চের কাজও করেছেন।
আলোচনার এক ফাঁকে দুই অতিথির হাতে প্রবাস মেলা’র সৌজন্য কপি তুলে দেন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক শহীদ রাজু।