হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: “উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহীত রূপকল্পে ‘অভিবাসন’ স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের উন্নয়ন আকাঙ্খা বাস্তবায়নের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে; আর ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সকল অংশীজনদের সহযোগিতা নিয়ে অভিবাসন ব্যবস্থাপনার জাতীয় কৌশলের খসড়া প্রণয়ন করেছে” ১৯ ডিসেম্বর বুধবার – জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘বৈশ্বিক অভিবাসন কম্পাক্ট’ সংক্রান্ত রেজুলেশনটি গৃহীত হওয়া উপলক্ষে প্রদত্ত বক্তব্যে একথা বলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।
তিনি আরও বলেন, “অভিবাসন সংক্রান্ত নিউইয়র্ক ডিক্লারেশন গ্রহণের পর আমরা অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছি; এখন এটি বাস্তবায়নের সময়। আজকের এই সভায় ‘বৈশ্বিক অভিবাসন কম্পাক্ট’ এর গৃহীত হওয়াই শেষকথা নয়, বরং এটি একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। আমাদের প্রত্যাশা, কম্পাক্টটির বাস্তবায়ন ও পর্যালোচনা হবে রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বে; তবে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রও এখানে উন্মুক্ত থাকবে”।
সম্প্রতি মরক্কোর মারাকাসে অনুষ্ঠিত অভিবাসন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ‘বৈশ্বিক অভিবাসন কম্পাক্ট’ এ বর্নিত চারটি মূল বিষয়ের উল্লেখ করেন যা আজকের সভায় আবারও তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।
বিষয় চারটি হল: ১) অভিবাসন চক্রের ক্ষতিকর দিক নির্মূল, ২) অভিবাসন প্রক্রিয়ায় মূল্য সংযোগ, ৩) সকল অভিবাসীদের মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং ৪) অভিবাসন ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রদান।
স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, “আজকের সভায় গৃহীত এই বৈশ্বিক অভিবাসন কম্পাক্টের প্রস্তাবনাসমূহ বাস্তবায়নকল্পে এ চারটি বিষয় সন্নিবেশিত করে সদস্য রাষ্ট্রসমূহের জন্য একটি ‘জাতীয় অভিবাসন কৌশল’ প্রণয়ন করা অপরিহার্য”।
নিরাপদ, নিয়মতান্ত্রিক ও নিয়মিত অভিবাসন ত্বরান্বিত করতে সম্প্রতি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গঠিত নেটওয়ার্ক কে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, “আমি প্রত্যাশা করি, অভিবাসন বিষয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়ার যে ব্যবধান আমাদের রয়েছে তা জাতিসংঘের অভিবাসন ব্যবস্থাপনার আওতায় আরও কমে আসবে এবং আমরা এই বৈশ্বিক কম্প্যাক্টের কার্যকর বাস্তবায়ন করতে পারব”।
উল্লেখ্য নিরাপদ, নিয়মতান্ত্রিক ও নিয়মিত অভিবাসনের জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশই প্রথম এই ‘বৈশ্বিক অভিবাসন কম্পাক্ট’ ধারণাটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে উত্থাপন করে যা দু’বছরেরও অধিক সময় ব্যাপী নেগোসিয়েশনের পর আজ সরাসরি ভোটের মাধ্যমে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হল। বাংলাদেশসহ ১৫২টি দেশ এতে পক্ষে ভোট দেয়; বিপক্ষে ৫টি এবং ভোট প্রদানে বিরত থাকে ১২ টি দেশ।