হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: ৯ জুন ২০২৪, রোববার নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে বিকাল ৭টায় সিরাজুল আলম খানের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী পালন করা হয়। সিরাজুল আলম খান স্মৃতি পরিষদ নিউইয়র্ক উদ্যোগে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সিরাজুল আলম খান স্মৃতি পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ডক্টর মহসিন পাটোয়ারী ও সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব শাহাব উদ্দীন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা ড. আবু জাফর মাহমুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট কলামিস্ট ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বিশ্বাস।
সভায় বক্তব্য রাখেন ডা. মুজিবুল হক, সিনিয়র সাংবাদিক সাঈদ তারেক, সিরাজুল আলম খানের সতীর্থ বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক বকুল, সিনিয়র সাংবাদিক মইনূদ্দিন নাসের, এডভোকেট মুজিবুর রহমান, এডভোকেট মতিউর রহমান, প্রফেসর ইমাম চৌধুরী, লিগেল কন্সালটেন্ট মুজিবুর রহমান, সাংস্কৃতিক সংগঠক মিথুন আহমেদ, এনামুল হায়দার, মোহাম্মদ জামান তপন, হাজী আনোয়ার হোসেন লিটন, মোহাম্মদ আব্দুর রহিম, আবুল কালাম আযাদ, মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন, ইয়াসমীন রশীদ, আলমগীর হোসেন, মন্টু চৌধুরী, মোহাম্মদ হেলিম রশিদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। আলোচনা সভায় অতিথিগণ বলেন, স্বাধীনতার অন্যতম সফল রুপকার, নিউক্লিয়াসের প্রতিষ্ঠাতা যার নেতৃত্বে ৬২ শিক্ষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬ দফা ১১ দফার আন্দোলকে গণঅভ্যুত্থানে রূপ দিয়ে দিয়ে ছিলেন। তিনি সিরাজুল আলম খান।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিব বাহিনী গঠন ও স্বাধীনতা সংগ্রামের যার ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে যার ভূমিকা নিয়ে কোন প্রশ্নোই উঠেনি। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে, মুক্তিযোদ্ধের স্বাদ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া জন্য স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ ও একটি বিপ্লবী সরকার গঠন নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সাথে মতবিরোধ দেখা দিলে ১৯৭২ সালের ৩১শে অক্টোবর জাসদের সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে ই শুরু হয় নানা বিতর্ক। কাজ যে করবে তার ভুল শুদ্ধ থাকবে। কোন মানুষ ই তার উর্ধ্বে নয়। কিন্তু সিরাজুল আলম খানের দেশপ্রেম, নিরঅহংকার, নির্লুভ জাতীর প্রতি আজীবন তার ত্যাগের ব্যাপারে কোন মানুষের প্রশ্ন, বিতর্ক থাকার কথা নয়। সারা জীবন তিনি ত্যাগের রাজনীতি করেছেন, ভোগের রাজনীতি করেন নি। তার চিন্তা ধারা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই পুস্তক পঠিত হয়। আমাদের দেশেও তার প্রকাশনা নিয়ে আলোচনা, গবেষণা করা উচিৎ। তাদের কারণেই জাতি বিশ্বের বুকে একটি দেশ ও মানচিত্র পেয়েছে। দল ও মতের উর্ধ্বে উঠে মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবদানের কারণে সবাই তাদের সম্মান ও শ্রদ্ধা করা উচিৎ। আমরা যদি ত্যাগী মানুষ ও বীরের মর্যাদা না দেই তবে ভালো মানুষ সৃষ্টি হবে না। বঙ্গবন্ধু মূল নেতা ছিলেন। কিন্তু জাতীয় চার নেতা। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী, সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক, কাজী আরেফ আহমদ, তোফায়েল আহমেদ চার খলিফা (ছাত্র নেতা) তাদের অবদান অস্বীকার করলে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাসকেই অস্বীকার করা হবে। জাতীর স্বার্থে নূতন প্রজন্মের কাছে তুলা ধরা একান্ত প্রয়োজন। তারাই নির্ধারণ করবে সঠিক ইতিহাস। দুর্নীতি, লুটপাটের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশের সঠিক ঠিকানা। সেই লক্ষ্যে দলমতের উর্ধ্বে উঠে দেশপ্রেমিক সকল বাঙালীকে একতাবদ্ধ হওয়া একান্ত জরুরী। শেষে সভাপতি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা হয়।