অাখি সীমা কাওসার, রোম, ইতালি প্রতিনিধি: বর্ণবাদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ডিক্রি বাতিলের দাবিতে ফের বিক্ষোভ করেছে ইতালিয়ানরা ও বাংলাদেশিসহ অন্যান্য দেশের অভিবাসীরা। ১০ নভেম্বর শনিবার দুপুর ১ টা থেকে পিয়াচছা রিপুবলিকাতে হাজার হাজার ইতালিয়ান সহ অভিবাসীরাও জড়ো হয়ে এক সাথে স্লোগান তুলে বর্ণবাদী আইন বাতিল কর, করতে হবে।
দাবি আদায়ে দেশটিতে ১০ নভেম্বর অভিবাসীরা প্রধান প্রধান সড়ক সাময়িক বন্ধ করে দেয়। তবে আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে। এতে বাংলাদেশি, ইতালিয়ান আফ্রিকানসহ অন্যান্য অভিবাসীরা অংশগ্রহণ করে।
এই আন্দোলনে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত রোম। টেরমিনিসহ রোমের পুরো রাস্তাঘাটে আন্দোলনরত জনগণের ভরপুর ছিল। হাজার হাজার বাংলাদেশি ও ইতালিয়ান নাগরিক ফেস্টুন, ব্যানার হাতে কালো আইনবিরোধী স্লোগান দিয়ে নতুন আইন বাতিলের দাবি জানান।
দেশটিতে অভিবাসী ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে নতুন এ আইন অনুমোদন করেছে ইতালির মন্ত্রিপরিষদ। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ এই অনুমোদন করা হয় উল্লেখিত ঐ আইন। এরপর ৪ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি সেরজো মাতারেল্লা সই করার পর আইনটি কার্যকর করা হয়। এ আইন অনুমোদন হওয়ায় বাংলাদেশি ও অন্য দেশের অভিবাসীরা চরম বিপাকে পড়ছে।
নতুন আইনে সন্ত্রাসবাদ, মানবপাচার ও মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। বেশ কয়েক বছর থেকে ইতালিতে অভিবাসী সমস্যা চলছে। চলমান এ অভিবাসী সমস্যা সমাধান করতে বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও সালভিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাই অভিবাসীদের অপরাধ দমনে এই পদক্ষেপ নেন। সরকারের লক্ষ্য আইন প্রণয়ন করে ইতালির সকল রোম ক্যাম্প বন্ধ করা। ব্যক্তি ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা।
নতুন আইন প্রসঙ্গে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত আব্দুস সোবহান সিকদার বলেন, অবৈধদের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। তবে বাংলাদেশিদের জন্য এ আইন তেমন কোন প্রভাব পড়বে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ আইন বাংলাদেশিদের চিন্তার কোন কারণ হতে পারে না। এ ব্যাপারে সামাজিক অংগ সংগঠন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীদের মতামত হলো , এটি একটি বর্ণবাদী আইন। এটি কার্যকরী হওয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসীরা চরম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। ফলে ভবিষ্যতে অভিবাসীদের ইতালিতে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।
অবশ্য কেউ কেউ বলছে তার উল্টো, অর্থাৎ ইতালির অর্থনৈতিক মন্দাভাব অনেক বছর থেকে । তাই ইতালির অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি করতে সরকার যে উদ্যোগই নেন তাতে সবার সমর্থন থাকা জরুরি। ইতালির নাগরিকদের ৬০% লোকের সম্মতি আছে এই নুতন আইনের প্রতি। অন্য ৪০% ইতালিয়ানরা বিবিধ মতামতের । বিশেষ করে অভিবাসীরা চায় এই আইন কররকর না হোক তাই এই কালো আইন বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশি, ইতালিয়ান, আফ্রিকার নাগরিকসহ অন্যান্য অভিবাসীরা ধারাবাহিক বিক্ষোভ সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার ফের বিক্ষোভ সমাবেশে অভিবাসীরা এ আইন বাতিলের দাবি জানান। এবং যতক্ষণ এই আইনটি বাতিল না হবে ততদিন আন্দোলন কারীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।