হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: ১০ নভেম্বর শনিবার নিউইয়র্কের উডসাইডস্থ গুলশান টেরেসে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন উত্তর আমেরিকা -এর প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে রজত জয়ন্তী।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি যেন হয়ে উঠেছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাস। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক, প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের স্বত:স্ফুর্ত উপস্থিতিতে রজত জয়ন্তী উদযাপনের অনুষ্ঠানটি উৎসবমুখর মিলনমেলায় পরিণত হয়। অনুষ্ঠানে কানাডা ও আমেরিকার অন্যান্য অঙ্গ রাজ্য থেকেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের অতীত স্মৃতি রোমন্থন, কুশল বিনিময়, অনুভূতি প্রকাশ এবং উচ্ছাসমুখর আনন্দঘন পরিবেশে সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত অনুষ্ঠানটি সকলে উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও বর্তমানে জর্জিয়ার ভালদোস্তা স্টেট ইউনিভার্সিটির সোশ্যাল ওয়ার্ক ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান মিয়া।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ। সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ আবদুল আজিজ নঈমীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাবিনা শারমিন নিহারের পরিচালনায় রজত জয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন – প্রধান অতিথি ড. মিজানুর রহমান মিয়া।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন- বিশেষ অতিথি প্রফেসর ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও প্রধান সমম্বয়কারী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর শাহনেওয়াজ ডিকেন্স, অনুষ্ঠানের আহবায়ক ও সংগঠনের সাবেক সভাপতি পারভেজ কাজী, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও সমম্বয়কারী শামীম আল-মামুন, সদস্য সচিব অধ্যাপক লুৎফুর রহমান, যুগ্ম আহবায়ক ও সংগঠনের সাবেক সভাপতি দিলওয়ার হাসান, যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক নোয়াব মিয়া।
উদ্বোধনী আনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের আহবায়ক ও সংগঠনের সাবেক সভাপতি পারভেজ কাজী। সংগঠনের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বর্তমান পর্যন্ত সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের পরিচয় ও সংগঠনে তাঁদের অবদান তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও প্রধান সমম্বয়কারী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর শাহনেওয়াজ ডিকেন্স।
এ সময় সাবেক সভাপতিদের মধ্যে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন- অধ্যাপক স্বপন দাস, রেজাউল করিম সগীর, বিষ্ণু গোপ, দিলওয়ার হাসান এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন – শামীম আল-মামুন, সামশুদ্দীন আজাদ, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র নেতা মনজুর আলম শাহীন, রাহাত মোকতাদির, এটর্নী মঈন চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামীম আল-মামুন, পরেশ সাহা প্রমুখ। সংগঠনে বিশেষ অবদান রাখার জন্য প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর শাহনেওয়াজ ডিকেন্স ও সাবেক সভাপতি পারভেজ কাজীর হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ আবদুল আজিজ নঈমী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরই আরম্ভ হয় এলামনাই পরিবার ও বন্ধুদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন- অনুপ দাশ, হাসান মাহমুদ, ফাহমিদা ইয়াসমিন এ্যানী, রুদ্রনীল দাশ রুপাই, রিশিতা চৌধুরী রুহি। দৈত সঙ্গীত পরিবেশন করেন- অং এবং রুবি।
নৃত্য পরিবেশন করেন- লিউনা মুহিত, তানজিলা নেওয়াজ, নামিয়া আমিন। কবিতা আবৃত্তি করেন- সৈয়দা পারভীন আক্তার, মুন জেবিন হাই। ১ম পর্বের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন- সাধারণ সম্পাদক সাবিনা শারমিন নিহার ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক শিবলী ছাদেক। ২য় পর্বের বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করে সবাইকে মুগ্ধ করেন- জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী এস আই টুটুল, তাজুল ইমাম ও বিউটি দাস।
এ পর্বটি পরিচালনা করেন- সাধারণ সম্পাদক সাবিনা শারমিন নিহার। “মুখরিত জীবনের চলার বাঁকে” ক্যাম্পাসের বহুল প্রচলিত জনপ্রিয় এই কোরাস গানটিতে অংশ নিয়েছেন- এস আই টুটুল, তাজুল ইমামসহ এলামনাই পরিবারের সদস্য ও অতিথি শিল্পীরা। সায়ান নিবিড় শারমিনের উপস্থাপনায় “স্মৃতি” শিরোনামে এলামনাই এসোসিয়েশনের বিভিন্ন কার্যক্রমের ছবি নিয়ে স্লাইড শো প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে আপ্যায়ন রেজিষ্ট্রেশন ও সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন অধ্যাপক লুৎফুর রহমান, এস.এম. ইকবাল ফারুক, আবুল কাসেম, অধ্যাপক গোলাম মোহাম¥দ মুহিত, মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, মীর কাদের রাসেল, রতন চৌধুরী, মোহাম্মদ মনজুর হাছান, মুহাম্মদ এয়াকুবউদ্দিন চৌধুরী, সনজীব তালুকদার, সামশুন্নাহার শিল্পী, তাহমিনা আক্তার, শিলা মুহিত, শিল্পী হাসান, আয়েশা আকতার হ্যাপী। অনুষ্ঠানে আগত সবাইকে নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয়। মধ্যরাতে অনুষ্ঠান শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের স্মৃতি নিয়ে সকলেই বাড়ি ফেরেন।