রাশেদ কাদের, আম্মান, জর্ডান প্রতিনিধি: জর্ডানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস, জর্ডানের পোশাক মালিকদের সংগঠন (JGATE) এবং পোশাক কারখানার মালিক, নিয়োগকারি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে এক সেমিনারের আয়োজন করে। দূতাবাসের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে JGATE –এর চেয়ারম্যান, সিইও, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, বিভিন্ন পোশাক কারখানার মালিক ও তাদের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং নিয়োগকারিগণ এই সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।
সভার শুরুতেই রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বলেন জর্ডানে বাংলাদেশি পোশাক শ্রমিকরা তাদের শ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ ও জর্ডানের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এর ফলে বাংলাদেশেও জর্ডানের শ্রম বাজার সম্পর্কে একটি উন্নত ধারণার তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রে পোশাক কারখানার মালিক ও তাদের সংগঠনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তিনি কোভিডকালীন সময়ে জর্ডান থেকে একজন শ্রমিককেও বাধ্যতামূলক ফেরত না পাঠানোর বিষয়ে দূতাবাসের অনুরোধ রক্ষা করায় কোম্পানিগুলোকে ধন্যবাদ জানান। রাষ্ট্রদূত জর্ডানে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য আরও অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দূতাবাসের কর্মপরিকল্পনার কথা জানান। এছাড়া, কর্মরত শ্রমিকদের সুন্দর কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করা, স্বাস্থ্য ও আবাসন সংক্রান্ত বিষয় গুলোতে নিয়মিত নজরদারি বাড়ানো এবং সুপারভাইজার ও কোম্পানির প্রশাসনিক কাজে বাংলাদেশি দক্ষ লোকদের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে জোর দেন। তিনি বাংলাদেশের সাথে অন্যান্য খাতে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়েও আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ শ্রমবাজার সম্প্রসারণে বাংলাদেশ বদ্ধপরিকর।
সেমিনারে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিবৃন্দের মধ্যে JGATE-এর চেয়ারম্যান বলেন, এই ধরনের সেমিনার দূতাবাসের সাথে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং সংলাপের জন্য একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। তিনি এই ধরনের উদ্যোগের জন্য দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানান। জর্ডানের সর্ববৃহৎ পোশাক কারখানা এবং সর্ববৃহৎ বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগকারি প্রতিষ্ঠান ক্লাসিক এপারেলস লিমিটেড-এর স্বত্বাধিকারী জনাব স্যানাল কুমার বলেন, জর্ডানে পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের অর্ধেকেরও বেশি শ্রমিক আসে বাংলাদেশ থেকে। এক্ষেত্রে জর্ডানে বাংলাদেশ দূতাবাস ও ঢাকায় মন্ত্রণালয় ও বোয়েসেল সবসময় পূর্ণ সহযোগিতা করে আসছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় পোশাক কারখায় শ্রমিক অসন্তোষ তৈরি হলে দূতাবাসের ত্বরিত ও ফলপ্রসু পদক্ষেপের প্রশংসা করে তিনি এই ধরনের সহযোগিতা অব্যহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া, অন্যান্যদের মধ্যে JGATE-এর সি.ই.ও মিস সাওসান, তুস্কা ফ্যাক্টরি লিমিটেডের মি. অমিত জয়পালন, এ.আর.কে পোশাক কারখানার পরিচালক মিঃ শিসাদ্রী, রেইনবো এপারেলস লিমিটেড-এর পরিচালক মিঃ নাসিম বক্তব্য রাখেন। বক্তারা জর্ডানের পোশাক খাতে বাংলাদেশি শ্রমবাজার সম্প্রসারণে বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
উল্লেখ্য, জর্ডানের পোশাক খাতের শ্রমিকদের অর্ধেকের বেশিই বাংলাদেশি দক্ষ পোশাক শ্রমিক। প্রায় ৪০-৪৫ হাজার এই পোশাক শ্রমিকরা বাংলাদেশ ও জর্ডানের অর্থনীতিতে সরাসরি ভূমিকা রাখছেন। দূতাবাসের অগ্রণী ভুমিকার ফলে প্রতিবছরই জর্ডানের পোশাক খাতে বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।