প্রবাস মেলা ডেস্ক: আজ অভিনেত্রী তারিনের জন্মদিন। বড় হয়ে তিনি যে অগণিত মানুষের ভালোবাসা জয় করবেন, সেটার ইঙ্গিত তিনি খুব ছোট বেলাতেই দিয়েছিলেন। তার বয়স যখন মাত্র নয় বছর, তখনই তিনি জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিভা অন্বেষণ ‘নতুন কুঁড়ি’-তে অভিনয়, নাচ এবং গল্প বলায় প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। তিনি তারিন জাহান। ছোট পর্দার মুগ্ধতার আবেশ ছড়ানো এক নন্দিত অভিনেত্রী। আজ ২৬ জুলাই তারিনের জন্মদিন। ১৯৭৬ সালের এই দিনে নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
তারিনের বেড়ে ওঠা একেবারে সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে। মাত্র সাড়ে তিন বছর বয়স থেকে তিনি নাচের তালিম নিয়েছেন। এছাড়া শাস্ত্রীয় সঙ্গীতেও তিনি দীক্ষা লাভ করেছেন। ১৯৮৪ সালে তারিন প্রথমবারের মতো কোনো সাংস্কৃতিক আয়োজনে নৃত্য পরিবেশন করেন। সেটা তাক লাগিয়ে দেয় সবাইকে। যার ফলে স্থানীয় পর্যায়ে তারিন দারুণ পরিচিতি লাভ করেন।
এরপর ১৯৮৫ সালে নতুন কুঁড়ি-তে প্রথম হওয়ার পর তিনি টেলিভিশনে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন। বাংলা নাটকের ইতিহাসে অন্যতম দুটি সেরা নাটক ‘এইসব দিন রাত্রি’ এবং ‘সংশপ্তক’-এ অভিনয় করেছেন তারিন। তার দক্ষয় অভিনয় সে সময়ই নজর কেড়েছে দর্শক ও নির্মাতাদের।
কেন্দ্রীয় চরিত্রে তারিন প্রথম অভিনয় করেন ‘কাঁঠাল বুড়ি’ নামের একটি নাটকে। যেখানে তার সহশিল্পী ছিলেন তৌকীর আহমেদ। এটি ছিল বেসরকারি টিভি চ্যানেল এটিএন বাংলায় প্রচারিত প্রথম নাটক।
এরপর ধীরে ধীরে তারিন হয়ে ওঠেন টিভি পর্দার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী। একে একে কাজ করেন বহু দর্শকনন্দিত নাটক ও টেলিফিল্মে। এর মধ্যে রয়েছে ‘ফুলের বাগানে সাপ’, ‘কথা ছিল অন্যরকম’, ‘ইউ টার্ন’, ‘মায়া’, ‘হারানো আকাশ’, নূপুর’, ‘বছর কুড়ি পরে’, ‘রাজকন্যা’, ‘সবুজ ভেলভেট’, ‘কালান্তর’, ‘নাকফুল’, ‘নাকফুল’, ‘ছায়াবিচিত্রা’, ‘কাগজের বাড়ি’, ‘বন চালতার গায়ে’, ‘স্বপ্নগুলো জোনাক পোকার মতো’, ‘জুয়াড়ি’, ‘সন্ধিক্ষণ’, ‘ডেথ অব বার্থডে’, ‘জ্যোৎস্না ও তার জল’, ‘বৃষ্টি’, ‘রঙ তুলির আঁচড়’, ‘অবন্তী তোমার অপেক্ষায়’, ‘গ্র্যান্ড মাস্টার’, ‘কালো মখমল’, ‘বেওয়ারিশ মানুষ’, ‘অপরাহ্ন’ ও ‘ডেলিসিয়া হোটেল’ ইত্যাদি।
দীর্ঘ অভিনয় জীবনে তারিন সিনেমায় সেভাবে কাজ করেননি। কেবল দুটি সিনেমায় তাকে পাওয়া গেছে। এগুলো হচ্ছে ‘পিরীত রতন পিরীত ধন’ এবং ‘কাজলের দিনরাত্রি’।
বহু গুণের অধিকারিণী তারিন গায়িকা হিসেবেও নিজের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। ২০১১ সালে তিনি গায়িকা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। সে বছর তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘আকাশ দেব কাকে’ প্রকাশিত হয়। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের একাধিক চলচ্চিত্রে গান করেছেন।
তারিনের গুণের সমাপ্তি এখানেই নয়। উপস্থাপিকা হিসেবেও তারিন মুগ্ধ করেছেন দর্শকদের। তার উপস্থাপনায় ‘সুর আর আনন্দ’ এবং ‘গানে আলাপনে’ অনুষ্ঠানগুলো দর্শকপ্রিয় ছিল।
তিন দশকের বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে তারিন পেয়েছেন অগণিত মানুষের ভালোবাসা। সেই সঙ্গে তিনি দুইবার মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন।
প্রবাস মেলা পরিবারের পক্ষ থেকে গুণী এই অভিনেত্রীকে জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।