আখি সীমা কাওসার, রোম, ইতালি প্রতিনিধি: প্রচণ্ড দাবদাহ ও তীব্র গরমের কারণে ইতালিতে দুই বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার দেশটির মিলানের লে মার্চ এবং সেন্ট্রাল রেলস্টেশনের কাছে এদের মরদেহ পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, তীব্র গরমের কারণেই হিট স্ট্রোক করে মারা গেছেন তারা।
এদিকে ইতালির সাতটি শহরের তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায় থেকে ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় দেশটির প্রশাসন শহরগুলোতে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। ইতালির বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে যে, গত ৪০ বছরেও এ ধরনের গরম তারা দেখেনি ।১৭/১৮ বছর আগেও ইতালিয়ানরা তাদের ঘরে পারতপক্ষে একটি ফ্যান রাখত না, এয়ারকন্ডিশনতো দূরের কথা ।
প্রচণ্ড গরমের কারণে জার্মানি, ফ্রান্সের বেশ কয়েকটি শহরেও জারি করা হয়েছে এই রেড অ্যালার্ট। বিভিন্ন টুরিস্ট স্পটে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত টুরিস্টরাও বিপাকে পড়েছে। যেখানে ট্যুরিস্টরা সামান্য বিকিনি পরে সাগর পাড়ে বালুর উপরে সূর্য স্নান করে, তাদের সাদা শরীর কালো করার জন্য, সেখানে এই প্রচন্ড আগুন গরমের জন্য হাঁসফাঁস করছে তারা।
সাগর পাড়ে যেখানে গাছের ছায়া আছে সেখানে দলবদ্ধভাবে অপেক্ষা করছে কখনএকটু গরম কমবে । সবাই হতাশা ব্যক্ত করছে যে, এবারে তারা সাগর পাড়ে সূর্য স্নানসহ তীব্র গরমের জন্য আনন্দ উপভোগ করছে না । যারা পরিবার নিয়ে আসছে তারা দিনের বেলায় হোটেল থেকে বের হয়না । যখন সূর্যের তাপ একটু কমে তখন তারা বের হয়।
ইতালির ফ্লোরেন্স, তোরিনো, নাপোলি ভেনিসসহ সব শহরে একই অবস্থা। অন্য বছরগুলোতে রোমের বাহিরের শহরগুলোতে বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকার শহর গুলোতে একটু গরম কম থাকে, কিন্তু এবার সব জায়গাতেই সমান গরম । বিশেষ করে রোমে গরম ইতালির অন্যান্য শহরের তুলনায় বেশি পড়েছে, রোমের গরমের তীব্রতা এতোই বেশি যে, রাস্তাঘাট একেবারে ফাঁকা ।
টুরিস্ট এলাকাগুলোতে রোমের মেয়র পর্যটকদের পানি সরবরাহ করছে বলে খবরে বলা হয়েছে । রোমসহ ইতালির প্রায় শহরেই ২৪ ঘন্টা বিভিন্ন স্পটে ফোনতানার পানি অনবরত পড়তে থাকে, যা টুরিস্ট এবং পথচারীদের জন্য বিনে পয়সায় উন্মুক্ত থাকে।
দেশটির বেশ কিছু জায়গায় ইতোমধ্যে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছে। এর আগেও ২০০৩ সালে দেশটিতে ভয়াবহ দাবদাহ দেখা দেয়। ওই সময় প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে দেশজুড়ে অনেক মানুষ মারা যায়। ইতালি এবং ফ্রান্স ছাড়াও পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র, জার্মানির মতো দেশগুলোতে এবার তীব্র গরম পড়েছে। দেশগুলোর তাপমাত্রার রেকর্ড থেকে দেখা যায়, চলতি বছরের জুন মাসের তাপমাত্রা অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।