রফিক আহমদ খান, মালয়েশিয়া
কুয়ালালামপুরের নিরিবিলি মনোরম জায়গা আমপাং এর জালান ইউথান্ত। যানবাহন ও মানুষের কোলাহল মুক্ত জালান ইউথান্ত এ অনেক দেশের দূতাবাস রয়েছে। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও হাইকমিশনারের বাসভবন দুটোই ছিলো সেখানে। গত কয়েক বছরের মধ্যে হাইকমিশন দুই জায়গায় বদলি হলেও হাইকমিশনারের বাসভবন সেই আগের জায়গাতেই রয়েছে।
হাইকমিশনারের বাসভবনটি ‘বাংলাদেশ হাউস’ নামেই পরিচিত। ভবনের গেইটের ডান পাশে ইংরেজিতে বড় করে লেখা আছে ‘বাংলাদেশ হাউস’। সীমানা প্রাচীরের ভেতরে বামপাশে আকাশের সীমানায় পতপত করে ওড়ছে মুক্তিযুদ্ধে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে পাওয়া আমাদের লাল-সবুজ পতাকাখানি। ভিনদেশে নিজ দেশের পতাকা দেখলেই গর্বে বুক ভরে যায়। ভালো লাগে। আরো ভালো লাগতো যদি বাংলাদেশ হাউসের নাম-পরিচয় ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষায়ও লেখা থাকতো। বাংলাদেশ হাউসের সামনে ইতালি অ্যাম্বাসি। ইতালি অ্যাম্বাসির গেইটে প্রথমেই ইতালিয়ান ভাষায় লেখা, তারপর মালয় ভাষা ও ইংরেজিতে লেখা।
মালয়েশিয়ার বুকে অবস্থিত সেই বাংলাদেশ হাউসে আমরা সাধারণ প্রবাসীরা যাওয়ার সুযোগ আসে মাঝেমধ্যে। যদি ঈদ-কোরবান উপলক্ষে ওই হাউসে প্রবাসীদের জন্য ‘ওপেন হাউস’ বা পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়।
ঈদ পুনর্মিলনী উপলক্ষে বাংলাদেশ হাউসে আগেও গিয়েছিলাম একবার। গত শুক্রবার বিকেলে আবারও গেলাম ঈদ পুনর্মিলনী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশ হাউসে’। মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বিভিন্ন পেশাজীবির উপস্থিতি ছিলো এই পুনর্মিলনীতে। হাইকমিশনার মহোদয় ও তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে বিরিয়ানি, সাদাভাত, মুরগির মাংস, গরুর মাংস, ডিম, সবজি, ঈদের সেমাই, পায়েস সহ বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিবেশন করা হয়। দূতাবাসের কর্মকর্তারা অতিথিদের অভ্যার্থনা জানান এবং নিজেরাই আন্তরিকতার সাথে আপ্যায়ন করান আগত অতিথিদের। সেটাই ভালো লেগেছে।
আমরা যখন এক পাশে বসে খাওয়াদাওয়া করছিলাম, তখন অন্যপাশে হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলামের সাথে বসে একান্ত আলাপ করছিলেন মালয়েশিয়ায় সফররত বায়রা সভাপতি বেনজির আহমদ এমপি। তাঁদের আলাপের বিষয় জানা না গেলেও প্রবাসে কর্মী প্রেরণকারীদের সংগঠনের প্রধান নেতা বেনজির আহমদ এমপি শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন প্রবাসীদের সাথে।
খাওয়া-দাওয়ার পর বাংলাদেশ হাউসের ড্রয়িং রুমে বাংলাদেশের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা, জাতির জনক, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতির সামনে ফটোসেশন করা, একে অপরের সাথে পরিচিত হওয়া, হালকা মতবিনিময় করা, গল্প করা, এরপর নিজ নিজ বাসা বা কর্মসস্থলে ফিরে যাওয়া। শাওয়াল মাসের শেষ দিকে এসে মান্যবর হাইকমিশনারের সৌজন্যে আরেকটু ঈদের আনন্দ উপভোগ করলাম আমরা।