অঞ্জন কুমার দে, মাস্কাট, ওমান প্রতিনিধি: “প্রভাতফেরী, প্রভাতফেরী
আমায় নেবে সঙ্গে,
বাংলা আমার বচন,
আমি জন্মেছি এই বঙ্গে।”
(কবিঃ আল মাহমুদ)
বাংলাদেশের প্রবাসী মানুষগুলোর প্রভাতফেরীতে অংশগ্রহণের সুযোগ আসে না বললেই চলে। বুকের গভীরে কলকল ধ্বনিতে একটা ভালোবাসার নদী বয়ে চলে।
নদীটির নাম বাংলাদেশ।
বিশেষদিনগুলোতে বিদেশ-বিঁভুইএ বসে নিত্যদিনের কাজের ফাঁকে মন পড়ে থাকে সুদুরের সেই শ্যামলিমামাখা দেশটায়, যেখানে আগুনমাখা ফাগুন জাগে কৃষ্ণচুড়ার শাঁখে, যেখানে অশোক-আর কিংশুকের ছোঁয়ায় প্রকৃতি এখন লাল।আর সেই লাল ছুঁয়ে যায় পলাশের ফুলে।
এমন সুন্দর এক দেশে জন্ম নিয়েও ভাগ্যগুণে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের ওমান প্রবাসী। ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯ বৃহষ্পতিবার রাতে আমরা সালালাহপ্রবাসী বাংলাদেশীগণ পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একত্রিত হই, একত্রিত হই ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জ্ঞ্যাপনে এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের উদ্দেশ্যে। মহতী এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হয় বাংলাদেশ সোশাল ক্লাব সালালাহর উদ্দ্যোগে।
বাংলাদেশ সোসাল ক্লাব সালালাহ শাখার উদ্যোগে স্থানীয় সিরাজ ভিলার চত্তরে এই প্রথম সর্বস্তরের বাংলাদেশী প্রবাসীদের সাবলীল অংশগ্রহনে যথাযথ মর্যাদায় মহান একুশে ফেব্রুয়ারী এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয় ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সোশাল ক্লাবের সালালাহ শাখার কার্যকরী পরিষদ ও সদস্যবৃন্দ , স্থানীয় সন্মানিত ব্যক্তিবর্গ, মহিলা ও শিশু, বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয় ।
অনুষ্ঠানের পুরো সময়টা জুড়ে ২১শের গান , কবিতা , কালো ব্যাজ ধারন সহ ভাবগম্ভীর পরিবেশে শহীদ দের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞ্যাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ভাষা আন্দোলনে শহীদ এবং ভাষাসৈনিকদের জন্য এবং বাংলাদেশ সার্বিক সমস্যার অবসান ও উন্নয়নের জন্য দোয়ার আয়োজন করা হয় । গত ২০ ফেব্রুয়ারী২০১৯ রাতে বাংলাদেশের চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে দূর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারান এবং আহত ব্যাক্তিবর্গের জন্য আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করে দোয়া করা হয় । নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।
ক্লাবের সেক্রেটারী ডাঃ মকসুদ ঈসা এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন বাংলাদেশ সোসাল ক্লাব প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই বাংলাদেশ বিভিন্ন সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান সমূহ পালন করে যাচ্ছে । মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এই প্রবাস জীবনে বাংলাদেশের সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের সূস্থচর্চা করা এবং তা ধারন করা । সবচেয়ে বড়কথা হলো অনুষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে অল্পকিছু সময়ের জন্য হলেও আমরা খুঁজে পাই বাংলাদেশ কে এই প্রবাসে । তিনি সামনের দিনগুলোতে এই প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং সবার সহযোগিত কামনা করেন । ক্লাবের সভাপতি জনাব মোহাম্মাদ আলম আগত সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
সবার আন্তরিক অংশগ্রহণে এবং দেশী স্বাদের খাবারে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও মরুর বুকে বসে বাংলাদেশকে অনুভব করতে পারলাম। সকল কিছুর জন্য বাংলাদেশ সোশাল ক্লাব সালালাহর সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞ্যাপন করছি।