মহিউল করিম আশিক, দুবাই, ইউএই: প্রতি বছর এসএসসিতে শতভাগ পাস করে যাওয়া ২৮ বছরের পুরাতন এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে ভবন সমস্যায় জর্জরিত। আরব আমিরাতের শিক্ষানীতির বড় বাধা প্রতিষ্ঠানটির পুরাতন ভবন। আয়তনে ছোট হওয়ায় পুরাতন ভবনে পাঠদান বন্ধ করার নির্দেশনায় হুমকির মুখে পড়লো বিদ্যালয়ে পড়ুয়া প্রায় ৬ শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন।
পরবাসে বেড়ে উঠা শিশু-কিশোরদের বাংলা ভাষা চর্চার পাশাপাশি বাংলাদেশি ক্যারিকুলামে শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস আল খাইমায় ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
জানা গেছে, আমিরাতের নতুন শিক্ষা আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ স্কুল পরিচালনার জন্য তৈরি করতে হবে ৩৬ স্কয়ার মিটারের কক্ষ। যে কক্ষে বসতে পারবে ২৫ জন শিক্ষার্থী। আবার ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য রাখতে হবে আলাদা আলাদা কক্ষ। একদিকে ভবন নির্মাণের তাগিদ অন্যদিকে ভিসা বন্ধ থাকায় নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও দোটানায় রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পরিষদ।
বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আলহাজ্ব পেয়ার মোহাম্মদ জানান, বর্তমানে যে ভবনে পাঠদান চলছে এটি পাঠদানের অনুপযোগী ঘোষণা করেছে আমিরাত প্রশাসন। তাদের আইন ও নির্দেশনায় অনুযায়ী পুরাতন ভবন ভেঙে নতুন করে ভবন তৈরি করতে হবে। ইতিপূর্বে বঙ্গবন্ধু-শেখ জায়েদ ভবন নামে বাংলাদেশ সরকার ও স্কুলের অর্থায়নে ২৬০০ বর্গ ফুটের একটি ভবন তৈরি করা হয়। সে ভবনের আদলে নতুন ভবন নির্মাণের নিদের্শনা এসেছে। যা অত্যন্ত ব্যয় বহুল। সরকারি অর্থায়ন ছাড়া এটি নির্মাণ করা কোনো ভাবেই সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, দুবাই ও উত্তর আমিরাত কনস্যুলেটের কানসাল জেনারেল ইকবাল হোসাইন খান বাংলাদেশি এই প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। এক লাখ দিরহাম খরচে তৈরি করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো ও ভবন নির্মাণের নকশা। কিন্তু অলাভজনক এই প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে ব্যয়বহুল এই ভবন নির্মাণের পর্যাপ্ত অর্থ নেই। পর্যাপ্ত অর্থ যোগানে অভাবে তাই আটকে আছে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন ভবনের কাজ শুরু হলেও বন্ধ রাখতে হবে শ্রেণি কার্যক্রম। কারণ নির্মাণাধীন ভবনে পাঠদানের নিয়ম নেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
বিষয়টি বিবেচনা করে পরিচালনা পরিষদের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা আরও জানান, বাংলাদেশ স্কুলের পাশেই আমিরাত সরকারের একটি পরিত্যক্ত ভবন রয়েছে, সেখানে অনুমতি পেলে আমরা আমাদের পাঠদানের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারব। এ ব্যাপারে দূতাবাস এবং বাংলাদেশ কনস্যুলেট সহযোগিতা করতে হবে।
উল্লেখ্য, রাস আল খাইমা প্রদেশে প্রায় ৭৫ হাজার প্রবাসীর মধ্যে প্রায় ১৬ হাজার পরিবার রয়েছে। এসব পরিবারের ৬০০ জন শিক্ষার্থী কেজি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করছে এ প্রতিষ্ঠানে। ঢাকা বোর্ডের অধীনে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় ওই প্রতিষ্ঠানের ২৭ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে।