প্রবাস মেলা ডেস্ক: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, শুক্রবার বিকলার ৪টায় NRB Welfare Society বাংলাদেশ শাখার প্রথম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র শাখার প্রধান সমন্বয়কারী এবং বাংলাদেশ শাখার সাধারণ সম্পাদক জনাব এ্যাডভোকেট রকিবুল ইসলাম।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন NRB Welfare Society এর চেয়ারম্যান জনাব ডক্টর আব্দুল মালেক ফরাজী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন NRB Welfare Society এর গ্লোবাল সেক্রেটারি জনাব আব্দুল জব্বার খান।
উক্ত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসাইন।
সভায় বক্তব্য রাখেন সর্ব জনাব, ডক্টর এম. এন. ইসলাম, জাতিসংঘের পিস মিশন এম্বাসেডর ডক্টর আশরাফুল ইসলাম, কোর্ডিনেটর NRB Welfare সোসাইটি অস্ট্রেলিয়া, ডাক্তার জাহির উদ্দিন, প্রতিনিধি ইরান প্রবাসী, ডক্টর আওরঙ্গ বেল্লাল, সিনিয়র অ্যাডভোকেট বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ডক্টর সাজ্জাদ দেওয়ান, প্রো ভি, সি, বগুড়া ইউনিভার্সিটি প্রিন্সিপাল জান্নাতুল ইরিন, প্রিন্সিপাল বাংলাদেশ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ এডভোকেট মো: শাহাদাৎ হোসেন, প্রফেসর, বাংলাদেশ ইসলামিক ইউনিভার্সিটি প্রিন্সিপাল আসাদুজ্জামান মানিক, অ্যাডভোকেট ফারজানা হক নপা, শিরিন হাসান ইভা, এনামুল হক, শেখ হুমায়ন কবীর, শরিফুল ইসলাম প্রমূখ।
উক্ত সভায় প্রায় দুই কোঠি প্রবাসীদের পক্ষ থেকে নিম্নে উল্লিখিত ১১ (এগারো) দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো:
১। আমরা প্রবাসীরও বাংলাদেশের নাগরিক। প্রবাসীদের ভোটাধিকার চাই।
২। জাতীয় সংসদে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব চাই। প্রবাসীরা বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১০% এক দশমাংশেরও বেশি। অতএব আমরা বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের (৩৭.১/২)সাড়ে সাঁইত্রিশটি আসনের দাবীদার। এসব প্রবাসী প্রতিনিধিদের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হতে হবে।
৩। বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যেই অনতিবিলম্বে নারী শ্রমিকদের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে এবং সর্বস্তরে তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। যেসব নারী শ্রমিক বিভিন্ন দেশে নানামূখী নির্যাতনের শিকার হয়ে বিপদে আছে তাদেরকে সরকারি খরচে দ্রুত দেশে ফেরৎ আনতে হবে এবং সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও নিরাপত্তাহীন ভাবে কোনো নারী শ্রমিক বিদেশ পড়ানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে আইন তৈরি করতে হইবে। ইতিমধ্যে যে বা যারা নিরাপত্তাহীনভাবে এবং কোনো হীন উদ্দেশ্যে নারী শ্রমিকদের বিদেশ প্রেরণ করিয়াছে তাহাদের ক্ষতিপূরণ সহ বিচার করিতে হইবে এবং দণ্ড নিশ্চিত করিতে হইবে। বিদেশে আটকে পরা বা জেলে থাকা বাংলাদেশীদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা।
৪। বাংলাদেশে প্রবাসীদের ও তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে একটি শক্তিশালী বিশেষ নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী গঠন করিতে হবে। প্রবাসীদের মান- ইজ্জত-সন্মান, অর্থ-সম্পত্তি, বাড়ি-ঘর, পরিবার অর্থাৎ তাদের ও তাদের পরিবার পরিজনের সার্বিক নিরাপত্তার সু-ব্যবস্থা তথা অস্ত্বিত্ব রক্ষায় নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।
৫। বাংলাদেশ সরকারি খরচে ও দায়িত্বে প্রত্যেকটি প্রবাসী শ্রমিক ও প্রবাসী শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জীবন বীমা থাকা বাধ্যতামূলক করতে হইবে ।
৬। বাংলাদেশের সরকারি খরচে ও দায়িত্বে প্রত্যেকটি প্রবাসী শ্রমিক ও প্রবাসী শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বার্ধক্য ভাতার বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা করতে হবে।
৭। বাংলাদেশ দূতাবাস গুলিতে প্রবাসী শ্রমিকের ও প্রবাসী শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদানের জন্য একটি দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বাধ্যতামূলক থাকতে হবে ।
৮। বাংলাদেশের সরকারি খরচে ও দায়িত্বে প্রত্যেকটি প্রবাসী শ্রমিক ও প্রবাসী শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল তাদের পরিবারের অন্নান্য সদস্যদের বেকার ভাতার বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা করতে হবে ।
৯। বাংলাদেশে প্রবাসী শ্রমিকের বিনিয়োগের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে হবে। প্রবাসীদের দেশে ফিরে যেতে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্বে সুদমুক্ত এবং স্বল্প সুদে প্রত্যেকটি প্রবাসী শ্রমিকের ব্যাংক ঋণ প্রদানের বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা করতে হবে ।
১০। ফ্যাশন ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার, মার্সেন্টাইজ, ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার, রং মিস্ত্রি, পাচক, দর্জি, ডিজাইনার, মটর মেকানিক, ড্রাইভার, ওয়েল্ডার, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, কৃষিবিদ, মৎস শিকারী, রাজমিস্ত্রি সহ অন্যান্য দক্ষ, যোগ্য জনশক্তি গড়ে তুলতে উন্নত মানের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে।
১১। প্রতিভা চর্চা এবং একটি সুস্থ ও মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার-বিনির্মাণর প্রয়োজনে প্রবাসীদেরকে ও প্রবাসীদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মদেরকে জাতীয় মূলধারার সাথে যুক্ত রাখতে দেশে-দেশে সামাজিক-সাংস্কৃতিক সেতু-বন্ধন তথা বাংলাদেশ কমিউনিটি সেন্টার এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র অর্থাৎ মুক্তচিন্তা চর্চা, ধারণা বিনিময় এবং যৌক্তিক-মানবিক ও নৈতিক চৈতন্য জাগরণের উন্মুক্ত ক্ষেত্র গড়ে তুলতে হবে।