প্রবাস মেলা ডেস্ক: যুক্তরাজ্যে নির্বাচন সামনে করে পদত্যাগ করেছেন দেশটির পার্লামেন্টের ৭৮ জন এমপি। এর ফলে বড় ধরনের বিপদের মুখে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। আগামী ৪ জুলাই ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে যা কয়েকদিন আগেই ঘোষণা দেন ঋষি সুনাক।
নিয়মানুযায়ী, ব্রিটেনে ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু ঋষি সুনাকের দল কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যে থেকেই দাবি ওঠে, নির্বাচন পিছিয়ে দেয়া হোক।
কারণ বিভিন্ন রিপোর্ট বলছে, গত কয়েকমাসে কনজারভেটিভ পার্টির প্রতি ব্রিটেনের জনতার আস্থা প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। ভোটে বিপর্যয়কর ফল করতে পারে পার্টি।
কিন্তু দলের সেই দাবি একপাশে ঠেলে সুনাক জানিয়ে দেন, আগামী ৪ জুলাই ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন। দলীয় অবস্থানের বিপরীতে গিয়ে দ্রুত নির্বাচনের ঘোষণা নিয়ে সুনাক বলেন, ‘ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ বেছে নেয়ার সময় এসে গেছে।’
সেই ঘোষণার পর দল থেকে এখন পর্যন্ত ৭৮ জন সাংসদ পদত্যাগ করেছেন। তারা জানিয়ে দিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে রাজি নন।
অনেকে আবার রাজনীতি ছেড়ে দেয়ারও কথা বলেছেন। পদত্যাগীদের মধ্যে রয়েছেন ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেসও।
সবশেষ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য মাইকেল গোভ ও আন্দ্রেয়া লিডসম আসন্ন নির্বাচনে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে কনজারভেটিভ পার্টি থেকে নির্বাচনে অংশ না নেয়া সংসদ সদস্যের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৮-এ।
গত শুক্রবার (২৪ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পদত্যাগের ঘোষণা দেন মাইকেল গোভ। এরপর সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন লিডসম। ঋষি সুনাক বরাবর লেখা এক চিঠিতে তিনি বলেন, সতর্ক পর্যবেক্ষণের পর আমি ঠিক করেছি, আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াব না।
আবাসনবিষয়ক মন্ত্রী গোভ লেখেন, রাজনীতিতে কেউই চাকরিজীবী নয়। আমরা স্বেচ্ছাসেবক-যারা স্বেচ্ছায় আমাদের ভাগ্য বেছে নিই এবং কাজ করার সুযোগ পাওয়াও চমৎকার। কিন্তু এমন মুহূর্তও আসে যখন আপনি জানেন, চলে যাওয়ার এটাই সময় এবং নতুন প্রজন্মেরই নেতৃত্ব দেয়া উচিত।
এমপিদের এমন গণহারে পদত্যাগের বিষয়ে বিপাকে পড়লেও তা বুঝতে দিতে চাচ্ছেন না ঋষি সুনাক। ৪৪ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই রাজনীতিক সহকারী ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারণায় চালাচ্ছেন।
বিষয়টাকে অনেকে কিছুটা অস্বাভাবিক বলছেন। একটি সূত্র সুনাকের এই পদক্ষেপকে ‘হাস্যকর’ বলেছে। কেননা প্রধানমন্ত্রীরা সাধারণত প্রচারণার প্রথম সপ্তাহান্তে তার উপদেষ্টাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য বাড়িতে সময় কাটান না।
বিরোধী লেবার পার্টির এমপি স্টেলা ক্রিসি সামাজিক প্ল্যাটফর্মে দেয়া পোস্টে বলেছেন, সুনাকের ইতিমধ্যেই একটি ডুভেট ডের (মানসিক অবসাদ কাটাতে অতিরিক্ত ছুটি) প্রয়োজন। ব্রিটেনেরও এখন একটি ভিন্ন সরকারের প্রয়োজন।
তবে ঋষি সুনাকের ঘরে সময় কাটানোর বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির মন্ত্রী বিম আফোলামি দাবি করেন, সুনাক উত্তর ইংল্যান্ডের নির্বাচনী এলাকা ইয়র্কশায়ারে প্রচারণায় দিন কাটিয়েছেন।
সূত্র: এনডিটিভি।