ক ম জামাল উদ্দীন, খামিস মুশাইত, সৌদিআরব প্রতিনিধি: মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে গাওঁ গ্রাম থেকে শুরু করে নগর থেকে শহরের আনাচে কানাচে সাজসাজ রব। জাতীয় পর্যায় থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন বিভিন্ন বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার সমাহারে যথাযোগ্য মর্যদায় পালন করেছেন, এ দিকে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও কিন্ত এ আয়োজন থেকে পিছিয়ে নেই।
মহান স্বাধীনতা দিবসের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছিল সৌদি আরবের আসির প্রদেশে দিবসটি উদাপন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু পরিষদ, আসির প্রদেশ কেন্দ্রীয় কমিটি সৌদি আরব বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন করেছেন দিবসটি।
এ উপলক্ষে ২৬ মার্চ খামিস মুশাইতস্থ স্থানীয় একটি হোটেল মিলনয়াতনে সংগঠনটির সভাপতি নুরুল আবছারের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সঞ্চালক ছিলেন যুগ্ম সম্পাদক এইচ এম কামাল চৌধুরী।
প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্ঠা শফিউল আলম, বিশেষ অতিথি ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক আজাদ রহমান, কিং খালিদ বিশ্ব বিদ্যালয়ের ইংরেজি প্রভাষক অধ্যাপক উসামা খালিদ, সৌদি টিভির ইলেকট্রিকেল এন্ড ইলেক্ট্রিশিয়ান ডিপার্টমেন্টের আবহা শাখার কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম, এস এম জাহাঙ্গীর আলম, মাওলানা আহমদ আলী নঈমী, আব্দুল মুকিত চৌধুরী শেলু, আব্দুল করিম, মাঈনুদ্দীন বিশ্বাস, ওমর ফারুক ও মুহাম্মদ লোকমান। প্রধান বক্তা ছিলেন এম এ রহিম ফারুক মাহমুদী।
আরো বক্তব্য দেন ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল আলম, ওয়াহেদ আলী, আমান উল্লাহ, নাসির উদ্দীন, মহিউদ্দিন, বেলাল উদ্দীন, মুহাম্মদ আজম, এয়াকুব আলী, নেজামুল ইসলাম,মিন্টু সুশীল, আমির হোসেন, ইমাম উদ্দীন ও রতন প্রমুখ।
আব্দুল কুদ্দুসের কন্ঠে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়।
বক্তারা তাদের বক্তব্যের মধ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল শহীদ ও গাজীদের অসমান্য অবদানের কথা তুলে ধরেন । তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী গণহত্যার সূচনা করে। নিরস্ত্র নিরপরাধ বাঙালির বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষণা করে। তখন মুক্তি সংগ্রামের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন, ‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অতর্কিতভাবে পিলখানায় ইপিআর ঘাঁটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমণ করেছে এবং শহরের লোকদের হত্যা করেছে। ঢাকা, চট্টগ্রামের রাস্তায় রাস্তায় যুদ্ধ চলছে। আমি বিশ্বের জাতিসমূহের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সঙ্গে মাতৃভূমি মুক্ত করার জন্য শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহর নামে আপনাদের কাছে আমার আবেদন ও আদেশ দেশকে স্বাধীন করার জন্য শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান।’ কোনো আপোষ নাই, জয় আমাদের হবেই। আমাদের পবিত্র মাতৃভূমি থেকে শেষ শত্রুকে বিতাড়িত করবেন। সকল দেশপ্রেমিক ও স্বাধীনতা প্রিয় লোকদের এ সংবাদ পৌঁছে দিন। আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করবেন। জয় বাংলা। বঙ্গবন্ধুর সেই আহবানে দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা নিজের জীবনের বিনিময়ে দেশকে শত্রু মুক্ত করে বিশ্বের বুকে আজ স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে পরিচিত করেছেন। লাল সবুজের পতকা বিশ্বের বুকে মাথা উচুঁ করে দন্ডায়মান হয়ে আাছে।
বঙ্গবন্ধু, তাঁর পরিবারবর্গ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন সংগঠনের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাওনালা ইউছুফ।
কিং খালিদ বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক, মিডিয়া প্রতিনিধি, পেশাজীবিগণ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও সংগঠটির অধীনস্থ বিভিন্ন আঞ্চলিক কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মী সহ বিপুল পরিমাণ প্রবাসী বাংলাদেশিদের সরব উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানস্থল এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। এ যেন মুক্ত বিহঙ্গের মত; সাত সমুদ্র তের নদীর ওপারে স্বাধীন বাংলাদেশের লক্ষকোটি প্রাণের সাথে স্বাধীনতার আনন্দ ভাগাভাগিতে শামিল হয়ে পড়েছিল এক ঝাঁক রেমিটেন্স যোদ্ধা ।