কামাল পারভেজ অভি, মক্কা, সৌদিঅারব প্রতিনিধি: চলতি হজ মৌসুমে হজ পালনে সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন বাংলাদেশি হাজিরা। অভিযোগ উঠেছে, কয়েকটি এজেন্সির অনিয়মের কারণে কালিমা লাগছে পুরো অর্জনে। অনিয়মের অভিযোগে এরইমধ্যে চার এজেন্সিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে ৩০০ জন হজযাত্রীর পাসপোর্টের পেছনে মোয়াল্লেম ও বাড়ি ভাড়ার তথ্য সম্বলিত কোনো স্টিকার ছিল না। যা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটির সরকার। কতিপয় হজ এজেন্সি’র চরম উদাসিনতা ও গাফলতির দরুণ এই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন নিরীহ হজযাত্রীগণ।
স্টিকারবিহীন পাসপোর্টধারী অধিকাংশ বয়োবৃদ্ধ হজযাত্রীগণ জেদ্দা আন্তর্জাতিক হজ টার্মিনালে গিয়ে ইমিগ্রেশন বিভাগে ৮/১০ ঘন্টা আটকে থাকতে হয়েছে। এতে সৌদি হজ মন্ত্রণালয় ও মদিনাস্থ আদিল্লা অফিস কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মক্কাস্থ বাংলাদেশ হজ মিশনকে। গত ২১ জুলাই ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব (হজ) এস এম মনিরুজ্জামান অভিযুক্ত ৪টি হজ এজেন্সিকে ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে।
পরিচালক হজ মো: সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, হজের পরে এসব দায়ী হজ এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূল ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্ত হজ এজেন্সিগুলো হচ্ছে, মেসার্স আকবর ওভারসীজ (৬১৬) রাজশাহী, মোবাস্বেরা ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (১০৫৫) পুরানা পল্টন, ক্যাসক্যাড ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (৭১৪) ও আল সেকেন্দার এন্ড ট্রাভেলস (১৪৬৬)। ক্যাসক্যাড ট্রাভেলস তাদের হজযাত্রী তোজাম্মেল হক ও তার স্ত্রী শেফালীকে দু’টি ভিন্ন বাড়ীতে রেখেছে। এছাড়া আরো তিনটি হজ এজেন্সি স্টিকার বিহীন পাসপোর্টের মাধ্যমে তাদের হজযাত্রীদের সউদী আরবে নিয়ে গেছে।
উল্লেখিত হজ এজেন্সি’র হজযাত্রীরাও চরম হয়রানি ও ভোগান্তির কবলে পড়েছেন। হাব মহাসচিব এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম রাতে এ বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে রাতেই হাবের পক্ষ থেকে সকল হজ এজেন্সিগুলোকে সর্তকমূলক নোটিশ পাঠানো হয়েছে। রাজকীয় সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় থেকে হজযাত্রীদের মক্কা-মদিনায় ভাড়াকৃত বাড়ী’র ঠিকানা ও মোয়াল্লেম নম্বর সম্বলিত স্টিকার পাসপোর্টে সংযুক্ত করে হজযাত্রীদের সৌদি আরবে প্রেরণের নিদের্শ দেয়া হয়েছে। বার বার এ ব্যাপারে এজেন্সিগুলোকে দিকনির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত হজ এজেন্সিগুলো উল্লেখিত নিদের্শনা প্রতিপালন না করে হজযাত্রীদের সৌদিতে প্রেরণ করায় সৌদি কর্তৃপক্ষও হতবাক হন এবং হজযাত্রীগণ চরম দুর্ভোগের শিকার হন। গতকাল পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার সকাল পর্যন্ত ৫০ হাজার ১০৬ হজযাত্রী সৌদিঅারবের মক্কা ও মদিনায় পৌছেছেন। হজ করতে গিয়ে মক্কায় এখন পর্যন্ত তিন বাংলাদেশি হাজি মারা গেছেন।