প্রবাস মেলা ডেস্ক: সুইডেনে আবারও কোরআন পোড়ানোর পরিকল্পনার প্রতিবাদে বাগদাদে সুইডিশ দূতাবাসে হামলা চালিয়েছে একদল বিক্ষোভকারী। এসময় দূতাবাসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ইরাকি দূতাবাসের সামনে পুলিশ ফের বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়ার একদিন পরেই বাগদাদে এ হামলার ঘটনা ঘটলো। মিডিয়া রিপোর্ট বলছে, স্টকহোমে আবারও কোরআন পোড়ানোর পরিকল্পনা করেছেন আয়োজকরা।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, সুইডিশ দূতাবাসের ভেতর বিক্ষোভ করছেন একদল বিক্ষোভকারী। এসময় দূতাবাস ভবনের ভেতর থেকে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, সুইডিশ দূতাবাসে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরাকের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সাড়া দেননি বাগদাদের সুইডিশ দূতাবাসের কর্মকর্তারাও।
বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে সিএনএন জানিয়েছে, গত বুধবার স্টকহোমে ইরাকি দূতাবাসের সামনে একটি বিক্ষোভের অনুমোদন দিয়েছে পুলিশ। মিডিয়া রিপোর্ট বলছে, আয়োজকরা সেখানে আবারও কোরআন পোড়ানোর পরিকল্পনা করছেন।
সুইডিশ পুলিশ এএফপি’কে বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে বিক্ষোভকারীদের পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু বলতে রাজি হয়নি তারা।
সুইডেনে সম্প্রতি তথাকথিত বাকস্বাধীনতার নামে একের পর এক কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে মুসলিম বিশ্বে। দেশে দেশে সুইডিশ কূটনীতিকদের ডেকে কঠোর ভাষায় নিন্দা জানানো হয়েছে। ইসলামবিদ্বেষী পদক্ষেপের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে সুইডিশ সরকারকে। এই ইস্যুতে জরুরি বৈঠকে বসেছিল জাতিসংঘও।
গত ২৮ জুন পবিত্র ঈদুল আজহার দিন সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের প্রধান মসজিদের বাইরে মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করেন এক ব্যক্তি। এর জন্য তাকে অনুমতি দিয়েছিল সুইডিশ পুলিশ।
এর পরপরই প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে মুসলিম বিশ্ব। মধ্যপ্রাচ্যসহ অসংখ্য দেশ এ ঘটনার নিন্দায় সরব হয় এবং স্টকহোমকে ধর্মীয় বিদ্বেষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায়।
তার আগে, গত জানুয়ারি মাসে সুইডেনে তুর্কি দূতাবাসের বাইরে কোরআন পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেছিল উগ্র ডানপন্থিরা। এর নিন্দায়ও সরব হয়েছিল গোটা মুসলিম বিশ্ব। প্রতিবাদ জানিয়েছিল বাংলাদেশসহ প্রায় সব মুসলিম দেশ।
বার্তা সংস্থা টিটির খবর অনুসারে, স্টকহোমে বিক্ষোভের আয়োজকরা নতুন করে ইরাকি দূতাবাসের বাইরে কোরআন ও ইরাকি পতাকা পোড়াতে চেয়েছেন। গত জুনের বিক্ষোভে যে দুজন অংশ নিয়েছিলেন, তারাই ফের এই কাণ্ড ঘটাতে চান বলে জানা গেছে।
এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষোভ শুরু হয় ইরাকে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, এদিন বাগদাদে সুইডিশ দূতাবাস ঘিরে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন ইরাকের শিয়া নেতা মুক্তাদা আল-সদরের অনুসারীরা।
সূত্র: সিএনএন, আল-জাজিরা