ঋতুশ্রী ঘোষ, টরন্টো, কানাডা: শুধু বাংলাদেশেই নয়, এখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন শহরে সদর্পে তাদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছেন বাংলাদেশি ও বাংলা ভাষাভাষীরা। বলা যায় তারই ফলশ্রুতিতে গত ৭ ও ৮ জুলাই অনুষ্ঠিত হলো ১২তম টরন্টো বইমেলা।
টরন্টো বাংলা বইমেলার এক যুগ পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা যে ঢাকার একুশে বইমেলার স্মৃতিকে আবারো পুনঃরুজ্জীবিত করেছিল বাংলাদেশের মানুষের মনে – তা বলার আর অপেক্ষা রাখেনা। ১২তম টরন্টো বইমেলাতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কবি আসাদ চৌধুরী, ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন, কথা সাহিত্যিক জাকির তালুকদার, কবি দিলারা হাফিজ ও লেখক নাজমুন্নেসা পিয়ারি।
বাংলাদেশের স্বনামধন্য প্রকাশনীর প্রকাশকদের অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো। এদের মধ্যে ছিলেন অন্যান্য প্রকাশনীর মুনিরুল হক, সময় প্রকাশনীর ফরিদ আহমেদ , অঙ্কুর প্রকাশনীর মেজবাহউদ্দিন , কথাপ্রকাশের জসিম উদ্দিন ও নালন্দা প্রকাশনীর রোদোয়ানুল জুয়েল। দুই দিন ব্যাপী এই বইমেলা সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে মহাসমারহে। বই প্রদর্শনী ছাড়াও মেলাকে জমজমাট করে রেখেছিলো ৪র্থ উত্তর আমেরিকা কবিতা উৎসব। এই অনুষ্ঠানে অভিবাসী কবিদের কবিতা পাঠ বিমোহিত করে দর্শকদের।
এছাড়াও মেলা জুড়ে ছিল আলোচনা অনুষ্ঠান, সেমিনার, নৃত্যানুষ্ঠান, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, শিশু-কিশোরদের বিশেষ অনুষ্ঠান ও লেখক – প্রকাশকের মুখোমুখি আড্ডা। বাংলাদেশ, কানাডা ও আমেরিকার বিভিন্ন কবি, লেখক ও সাহিত্যিকরা অংশগ্রহণ করেন এই মেলায়। মেলা উপলক্ষ্যে একটি স্যুভেনিরও প্রকাশ করা হয়।
বইমেলার প্রথমদিন সকালবেলা ৱ্যালির মাধ্যমে শুরু হয় ১২তম টরন্টো বাংলা বইমেলার শুভযাত্রা। ৱ্যালির এবং ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি সেলিনা হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বইমেলার আহ্বায়ক সাদি আহমেদ। ৪র্থ বারের মতো এই বইমেলার আর এক দারুন আকর্ষণ ছিল – উত্তর আমেরিকা কবিতা উৎসব। বাংলাদেশের বাইরে থেকে কবিদের কবিতার আবেগ ও শব্দচয়ন দর্শকদের অভিভূত করে। এই অনুষ্ঠানটির আহবায়ক ছিলেন স্বনামধন্য কবি মেহরাব রহমান। অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি অখিল সাহা, কবি সুরজিৎ রায় মজুমদার, কবি ঋতুশ্রী ঘোষ, কবি মৌ মধুবন্তী, কবি দেলোয়ার এলাহী, কবি হাসিনা জামানা, অনুষ্ঠানের সঞ্চালক কবি মেহরাব রহমান ছাড়াও আরো অনেকে । প্রবাসে বসেও বাংলা বইমেলার আয়োজন টরোন্টোর বাঙালিদের বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসার আলিঙ্গন আরও দৃঢ় করে।