প্রবাস মেলা ডেস্ক: শফী তোমার মৃত্যুর দিন দুয়েক আগে নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী’র একটি কবিতায় পাঁচ, দশ বা পঞ্চাশ বছরেও যদি দেখা হয় তোমার টাইম লাইনে দিয়েছো! দেখা কি হবে আদৌও! আমি ভেবে কুল পাচ্ছি না। সনাতন ধর্মে একটা কথা আছে নারী নদী এবং কুল (জাতিকুল) এর উৎস খুঁজতে নেই। তাই বাদ। শফী দেখলাম মোক্তার পাড়া মাঠ ভরে গেছে তোমার জানাজায়। দুঃখ করোনা আমরা দেখছি অনেক জনপ্রতিনিধি মারা যায় /যাবে কিন্তু তোমার এই সম্মান ভালোবাসার ধারের কাছে কি থাকবে?
শফী তোমার কি মনে পরে মান্না ভাইদের সঙ্গে ভাগাভাগির পর আমি, শিরিন আখতার তোমার বাসায় তিন-চারদিন ছিলাম। খালাম্মা (তোমার মায়ের রান্না) অপুর্ব। আমাকে বললেন, প্রধান তুমি নাকি ভালো খেতে পার বল কিকি খাবে। সেই কতো রকমের মাছ কি সুন্দর রান্না মজা করে খাচ্ছি। আর দ্বিতল বাড়িতে থাকছি। এরমধ্যেই তুমি সব ঠিক করে কলেজে প্রোগ্রাম করে সব ঠিক করে ফেললে। সত্যি অসাধারণ তোমার সংগঠিত করার ক্ষমতা।
শফী তোমাকে বলা হয়নি
“দালান গোএ পুস্করিণী গায়ী
এরাই কুলীন
আরও আছে
দু-এক ঘর
লোহার সিন্দুক
টিনের ঘর।
শফী তুমি কি জানতে তুমি কুলীন ঘরের সন্তান অথচ রাজনীতি করলে খেটে খাওয়া মানুষের। শফী কে বলে তুমি এমপি হওনি তাই কিছু পাওনি।
শফী তোমার কি মনে পরেনা প্রয়াত নির্মল সেন এর কথা, মনে কি পরেনা সদ্য প্রয়াত পঙ্কজ দার কথা এঁরাও কুলীন। কিন্তু রাজনীতি করেছে খেটে-খাওয়া মানুষের জন্য। শফী আমরা বহুদিন একসঙ্গে চলেছি তোমার সঙ্গে সম্পর্কটা ছিল দ্বান্দ্বিক- অম্ল মধুর।
তোমার মা হাতে অনেকগুলি মাদুলি দেখিয়ে বলেছিলেন আমার একমাত্র ছেলে শফী শুনলাম তোমরা সাত ভাই ওঁকে তোমার আর একটা ভাই বানিয়ে নাও। তুমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এর (বৈজ্ঞানিক) সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাধারণ সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করেছো। একসঙ্গে কাজ করতে কখনও তোমার ভীষণ রাগ হতো, আবার তোমার মায়ের কথা মনে করে ভুলে যেতাম! শফী আজকে তোমার স্মরণে দুটি ঘটনার উল্লেখ করছি।
সালটা মনে করতে পারছিনা আমি। সাধারণ সম্পাদক তুমি সাংগঠনিক সম্পাদক ঢাকা জেলা ক্রিয়া সমিতি মিলনায়তনে মোনায়েম খানের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হবে বলে খবর বেড় হয়েছে পত্রিকার।
তোমার সঙ্গে আলাপ করলাম এটা ভেঙে দিতে হবে তুমি আগামীকাল দুটার মধ্যে জাসদ অফিসে তিরিশ জন ছাত্রলীগ কর্মী পাঠাবে শুধু বলবে প্রধান যা বলবে তাই করবে। এর দুজনেই আলাপ করে ঠিক করলাম ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এর সঙ্গে কালকে আট-দশ জন আপনার দলের কর্মী রাখবেন আওয়ামী লীগ অফিসে আমার সঙ্গে দিবেন মোনায়েম খানের স্মৃতি তর্পন অনুষ্ঠান ভেঙে দিব। সম্মতিতে বললো আগামীকাল তিনটায় আওয়ামী লীগ অফিসে থাকবো আমি সহ কিন্তু দুঃখজনক নানক সাহেব অফিসে ছিলেন আমি গেলে বললেন” বলেছিলাম আসার জন্য কিন্তু কেউ আসেনি “আমি জাসদ অফিসে ফিরে দেখলাম আমাদের সবাই হাজির। তিন জনকে তিন দফায় রেকি করার জন্য পাঠিয়ে আমরা সেই ডিডিএস মিলনায়তনে মোনায়েম খানের স্মৃতি অনুষ্ঠান ভেঙে দিয়েছিলা।
একই ভাবে প্রেসক্লাবে তথ্য মন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম এঁর দৈনিক পত্রিকা উদ্বোধন উপলক্ষে গাড়ি ভেঙে দিয়েছিলাম। শাহ মোয়াজ্জেম ফোন করে হাসানুল হক ইনু কে বলেছিলেন তোমার ছেলেরা করেছে কিন্তু কোন মামলা হয়নি! শফী বর্তমান সময়ের মতো হলে আমাদের সারাটা জীবন কারাগারে থাকতে হতো। শফী এই বলে শেষ করি নিশ্চয়ই বিধাতা তোমার প্রতি সদয় হয়ে জান্নাত নসীব করবেন।
আল্লাহ তোমার বোনদের সহ তোমার সন্তান দের ভালো রাখুক এই কামনা।
আমীন।
সূত্র: নাজমুল হক প্রধান (সাধারণ সম্পাদক, জাসদ) এর ফেসবুক থেকে।