ওয়াসীম আকরাম, বৈরুত, লেবানন প্রতিনিধি: ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে গত নয় বছর আগে লেবানন প্রবাসে পাড়ি জমায় মেহেরপুরের সন্তান আশারাফুল ইসলাম। গত ৯ বছর ভাগ্য তার সহায় হলেও আড়াই মাস গলা থেকে পা পর্যন্ত প্যারালাইসেস হয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রয়েছেন আশরাফুল।
লেবানন কানাডিয়ান হাসপাতালে আইসিও থেকেই তাকে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগীতায় ৩ সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিমসহ দেশে পাঠানো হয়। গত ৯ বছর আগে লেবানন আসে মেহেরপুর জেলার আশরাফুল এবং চাকুরী করতেন একটি পেট্রোল পাম্পে। পরিবারের অভাব দূর করতে গত ৯ বছরে তার দেশে ফেরা হয়নি। বুক ভরা আশা ছিল আরও দশজনের মতই দেশে ফিরবেন আশরাফুল কিন্তু ভাগ্য তার সহায় হলো না।
গত আড়াই মাস আগে ডিউটি শেষে বাসায় ফিরতেই তিনি নিজেকে অসুস্থ্য বোধ করেন। কিছুক্ষন পরই মাটিতে লুটে পরেন তিনি। সাথে থাকা বাংলাদেশিরা তাকে নিয়ে যাওয়া হয় লেবানন কানাডিয়ান হাসপাতালে। সমস্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ডাক্তার জানান গলা থেকে নিচের সমস্ত শরীর তার প্যারালাইসেস হয়ে গেছে এবং চিকিৎসা করলে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ডাক্তারের পরামর্শে চলে আশরাফুলের চিকিৎসা কিন্তু অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়না। তাই উদ্যোগ নেয়া হয় আশরাফুল কে দেশে ফেরাবার।
অন্য দিকে হাসপাতালের খচর বেড়েই চলে এবং মালিক পক্ষ নিজেদের গুটিয়ে নিতে চায় কিন্তু বাংলাদেশ দূতাবাসের হস্তক্ষেপে মালিক পক্ষ বাধ্য হয় আশরাফুলকে দেশে ফেরানো আগ পর্যন্ত ঐহাসপাতালেই চিকিৎসা দিতে।
এরপর লেবাননে সমস্ত আইনি জটিলতা কাটিয়ে দীর্ঘ আড়াই মাস পর গত শুক্রবার ৫ জুলাই আশরাফুলকে ৩ সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিমসহ দেশে ফেরানো হয়। অন্য দিকে দেশে ফেরার দিন হাসপাতালে থাকা অবস্থায় আশারাফুল দেশে ফিরতে পারছেন জেনে খুশিতে ফেটে পরেন। তার এমন যাওয়ার অনুভূতিতে বলেন, নিজের ছেলে-সন্তান, মা-বাবা, ভাই-বোন, পরিবার- পরিজন এবং নিজ মাতৃভূমি বাংলাদেশ জীবিত অবস্থায় যেতে পেরে আল্লাহর নিকট লাখো শুকরিয়া আদায় করেন।