ওয়াসীম আকরাম, বৈরুত, লেবানন: প্রায় দুই মাস পর লেবাননে কর্মী পাঠানোর সাময়িক স্থগিতাদেশ তুলে নিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৈরুত দূতাবাস ভিসা সত্যায়িত করার কার্যক্রম ইতোমধ্যে চালু করেছে।
১৫ অক্টোবর ২০১৮ সোমবার দূতাবাসের হেড অব চ্যান্সারী ও কাউন্সেলর সায়েম আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এমনটি জানানো হয়েছে। তবে ভিসা প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ফেরাতে কিছু শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২৮ আগস্ট ২০১৮ এর আগে লেবাননের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যে সকল ভিসা ইস্যু করেছে, সেই সকল ভিসার ক্ষেত্রেও এসব শর্ত প্রযোজ্য হবে। ভিসা সত্যায়িত করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সাথে এই তথ্যগুলোও জমা দিতে হবে।
শর্ত গুলো হচ্ছে, ১) যে সকল কোম্পানী বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আনবে তাদের বিস্তারিত তথ্য বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানাতে হবে। যেমন- অত্র কোম্পানীর শ্রমিকের মোট চাহিদা, বর্তমানে কতজন শ্রমিক কাজ করছে, আরো শ্রমিকের চাহিদা আছে কিনা, কোম্পানির সুনাম, বেতন-ভাতা, খাবার-বাসস্থানসহ অন্যান্য বৈধ সুবিধাদি এবং চিকিৎসা সুবিধাসহ একজন শ্রমিকের জন্য যেসকল সুবিধা প্রয়োজন তা রয়েছে কিনা এসকল তথ্য দূতাবাসকে জানাতে হবে।
২) বৈরুত দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ অত্র কোম্পানী পরিদর্শন করে ভিসার সাথে জমা দেওয়া যাবতীয় তথ্য যাচাই বাছাই করার পর সিদ্ধান্ত নিবে। অত্র কোম্পানী যথাযথ প্রমাণিত হলে কর্মী আনার অনুমতি পাবে। তবে নতুন ভিসার ক্ষেত্রে ভিসা ইস্যু করার আগেই কোম্পানীগুলোকে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করে এসকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দূতাবাসের অনুমতি নিতে হবে।
বাংলাদেশ সরকারের এই নীতিমালাকে স্বাগত জানিয়েছে সাধারণ প্রবাসীরা। তারা মনে করেন এতে নতুন করে যারা লেবানন আসবেন, তারা প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পাবেন।
রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার বলেন, দালালদের হাতে সাধারণ প্রবাসীদের প্রতারণা বন্ধ করার লক্ষ্যে সরকার গত আগস্ট মাসে সাময়িকভাবে ভিসা সত্যায়ন বন্ধ করে। অতঃপর লেবাননে শ্রমিক প্রেরণের জন্য একটি নতুন গাইডলাইন তৈরি করে।
সরকার সম্প্রতি সাময়িকভাবে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে ভিসা সত্যায়ন পুনরায় চালু করেছে। তবে অবশ্যই তা হতে হবে নতুন গাইডলাইন অনুসরণ করে। দূতাবাস আশা প্রকাশ করে যে এর ফলে লেবাননে শ্রমিকদের ভোগান্তি বহুলাংশে হ্রাস পাবে। এর আগে গত ২৩ আগস্ট লেবানন বাংলাদেশ দূতাবাসের হেড অব চ্যান্সারী ও কাউন্সেলর সায়েম আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিলেন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দূতাবাস কর্মী নিয়োগের চুক্তিপত্র সত্যায়ন করার প্রক্রিয়া বন্ধ রাখবে এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ২৯ আগস্ট ২০১৮ নতুন নীতিমালা করে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।