ওয়াসীম আকরাম, বৈরুত, লেবানন: যথাযথ মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে লেবানন বৈরুতের বাংলাদেশ দূতাবাস।
দিনটির প্রথম পর্বে সকাল ৯টায় দূতাবাস ভবন ছাদে রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ লেবানন শাখা, প্রবাসী বাংলাদেশি, দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়।
দ্বিতীয় পর্বে বিকাল ৬টায় দূতালয় প্রধান জনাব সায়েম আহমেদ এর পরিচালনায় জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। প্রথমে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেন মহামান্য রাষ্ট্রদূত জনাব আবদুল মোতালেব সরকার। এরপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ লেবানন শাখা, আওয়ামী শ্রমিক লীগ ও মুক্তযুদ্ধা পুর্ণবাসন সোসাইটি ও যুবকমান্ড লেবানন শাখা জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। অনুষ্ঠানের এ পর্বে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত পাঠ শেষে বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের সদস্যসহ শাহাদাৎ বরণকারী সকলের রূহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত এবং তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের একটি বড় অংশ জুড়ে ছিল আওয়ামী লীগ লেবানন শাখার অতিথিবৃন্দের অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধুর জীবন, আদর্শ ও দর্শনের উপর আলোচনা। এ পর্বে বক্তাগণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রাম এবং বাঙালি জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও অবদানের কথা তুলে ধরেন। আলোচকবৃন্দ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সংঘটিত ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাকাণ্ডে শাহাদাতবরণকারী বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের আঠারো জন সদস্যের রূহের মাগফেরাত কামনা করেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ, জনমানুষের জন্য তাঁর ত্যাগ ও সংগ্রামের চেতনা বুকে ধারণ করে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখার প্রত্যয় জানান বক্তাগণ।
বাংলাদেশ সরকারের নিযুক্ত বৈরুত দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার তাঁর সমাপনী বক্তব্যের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী ও সাহসী নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও মুক্তি অর্জন করেছে। তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে এবং বাঙালি জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরেন। একটি গর্বিত জাতি স্বতন্ত্র পরিচয়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর যে দুর্লভ সম্মান বাঙালি পেয়েছে, তার জন্য সমগ্র জাতি তাঁর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ- চিরঋণী বলে তিনি উল্লেখ করেন। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠাই ছিল জাতির পিতার আজীবনের লালিত স্বপ্ন উল্লেখ করে তিনি জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলকে সচেষ্ট হতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অভূতপূর্ব সাফল্যের নানা দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সংকল্প সমগ্র দেশবাসিকে উজ্জীবিত ও দেশের উন্নয়নে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার অনুপ্রাণিত করেছে। সবশেষে আপ্যায়ন মাধ্যমে শোক দিবসের কার্যক্রম সমাপ্তি ঘটে।