সৈয়দ এম হোসেন বাবু, লস এঞ্জেলস, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: আবহমানকাল থেকেই গ্রীষ্ম উৎসব পালিত হয়ে আসছে বাংলাদেশে, শুধু বাংলাদেশ নয় গোটা পৃথিবীর মানব গোষ্ঠীর মধ্যেই গ্রীষ্ম পালনের রীতি প্রচলিত আছে। প্রাচীন গ্রীস, মিসর রোম ও পারস্যে গ্রীষ্ম উৎসব উদযাপন যেন মানুষ জীবনের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে মিশে আছে।
হাজার বছর ধরে চৈত্রসংক্রান্তির গায়ে উত্তরবঙ্গে বসে গাজনের গানের আসর আর শিবের গীতি আসর। বাঙালি যে যুদ্ধে জয় করা জাতি সে প্রমান তো ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধেই প্রমান করেছে অস্ত্র ধরে। স্বাধীনতা যুদ্ধে পিছিয়ে ছিলনা না হাজার হাজার মাঈল দূরে থাকা প্রবাসী বাঙ্গালিরাও। পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকেই বাঙ্গালিরা অংশ নেয় দেশ মাতৃকাকে পাকিস্তানী হায়েনা থেকে মুক্ত করার জন্যে। বাংলা মায়ের যে বীর সেনানীর অকাতরে ঢেলে দিয়ে ছিল বুকের তাজা রক্ত, যাদের রক্তে আকা হয়েছে বাংলার মানচিত্র । সেদিন সুদুর প্রবাসে থেকেও বাঙ্গালিরা সেই সব বীরদের জন্য উজার করে দিয়েছিল ঘাম ঝরানো অর্থ। অনেকে বিদেশের বিলাস বহুল জীবন ত্যাগ করে ছুটে গিয়েছিল পাকিস্তানী হায়নার হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহন জন্য। বুকের মাঝে লালন করা বাঙালির বাঙালিত্ব কোন কালেই বিলীন হয়ে যায় না দেশ থেকে সে যতো দূরেই থাকুক না কেনো। জীবন যেখানে বাধা পড়ে মানুষ সেখানেই বাসা বাধে এটা প্রকৃতির নিয়ম।
সেই জীবনের আহবানে লক্ষ লক্ষ বাঙালি নিজ মাতৃভূমির সংস্কৃতি ছেড়ে এই সুদূর প্রবাসে বিদেশী সংস্কৃতির পরিমন্ডলে বসবাস করলেও বুকের ভেতর লালন করছে বাংলাদেশের হাজার হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী বাংলা সাংস্কৃতি তারই প্রমাণ মিলে গত রবিবার ২ সেপ্টেম্বর ২০২৮ লস এন্জেলেসের অদূরে। অরেঞ্জ কাউন্টি ক্যালিফোর্নিয়া কনভেনর রফিকুল হক রাজু ,অনুষ্ঠান পরিচালক সৈয়দ এম হোসেন বাবু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক কৃষ্ণ পালের উদ্যোগে শহিদ আহম্মেদ রনি ও রোশনী আলমের উপস্থাপনায় এই প্রথম সাতটি সংগঠন নিয়ে গ্রীষ্ম বরণ উৎসব ২০১৮ পালিত হয়। সংগঠনগুলো হল মন পবন, সনাতনী হিন্দু সোসাইটির, ক্রান্তী, বাংলাদেশ একাডেমী, বাংলা গানের স্কুল, হৃদম, বিসিআইই। অনুষ্ঠান সহযেগিতায় ছিলেন কাবেরী কানিজ ফাতেমা, নাহিদ সিরাজী সিমীম, মেজর অ: কুতুবী, শিল্পী রহমান, কাবেরী রহমান, কৃষ্ণ পাল, সহ অনেকে।
উপস্থিত দর্শকদের মুহূর্মুহ করতালিতে শিল্পীদের অভিন্দন জানান। যদিও অনেকেই ছিলেন স্বজনদের ছেড়ে অনেক দূরে কিন্তু প্রবাসী বাঙালীদের ঐকান্তির প্রচেষ্টায় অনুষ্ঠিত গ্রীষ্মবরণ উৎসব সে দূরত্ব কিছুটা হলেও কমাতে সাহায্য করেছে। তার প্রমান মিলে যখন বাংলাদেশি কমিউনিটির মমিনুল হক বাচ্চু, শামসুদ্দিন মানিক, সোহেল রহমান বাদল, ড: সিরাজ উল্লাহ, ড. জয়নুল আবেদিন, আনিসুর রহমান, আবুল খায়ের, কুহিনুর রহমান, বিবেক সরকার, জাহিদুল মাহমুদ জামি, সাঈদ, নজরুল ইসলাম প্রমুখ। নতুন প্রজন্ম ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় প্রবাসে বসবাসরত মুক্তিযাদ্ধাদের।