সৈয়দ এম হোসেন বাবু, লস এঞ্জেলস, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: ৪ নভেম্বর ২০১৮ রবিবার সন্ধ্যায় লস এন্জেলেস সাইনটোলজি অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্যালিফোর্নিয়া শাখা যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করলো জেল হত্যা দিবস।
৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবস বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে লজ্জাজনক দিন।বাংলাদেশিদের জন্যে একটি কষ্টের ও কলঙ্ক হিসেবে চিহ্নত হয়ে আছে। যে কারাগারে পৃথিবীতে মানুষের সব চেয়ে নিরাপত্তার স্থান, সেই কারাগারেই বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিচক্র একাত্তরের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের শত্রু ঘাতকদল রাতের অন্ধকারে ভিতরে ঢুকে জাতীয় চার নেতাকে ব্রাশফায়ার করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর বাঙালি জাতি হারিয়েছিল দেশের চার সূর্যসন্তানদের হারিয়েছে বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামান।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই নিহত প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য উপস্থিত সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন এবং নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লাগ ক্যালিফোর্নিয়া শাখার সভাপতি তৌফিক সোলাইমান তুহিন বলেন, সেদিন দেশ মাতৃকার সেরা সন্তান জাতীয় এই চার নেতাকে শুধু গুলি চালিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, কাপুরুষের মতো গুলিবিদ্ধ দেহকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে একাত্তরের পরাজয়ের জ্বালা মিটিয়েছিল। প্রগতি-সমৃদ্ধির অগ্রগতি থেকে বাঙালিকে পিছিয়ে দিয়েছিল। ইতিহাসের এই নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় শুধু বাংলাদেশের মানুষই নয়, স্তম্ভিত হয়েছিল সমগ্র বিশ্ব। কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় বর্বরোচিত এ ধরনের হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
বাংলাদেশ আওয়ামী লাগ ক্যালিফোর্নিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন আহম্মেদ পান্না বলেন, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অভ্যন্তরীণ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এই জাতীয় চার নেতাই বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী হিসেবে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠনের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখেন।ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি বলেন শাহা আলম বলেন ৯ মাস রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময় সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের মুজিবনগর সরকারের সমধিক পরিচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দিন আহমেদ একটি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় কোটি কোটি বাঙালীর স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর অপর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এএইচএম কামারুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি ও কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট আওয়ামী যুবলীগ সভাপতি তাপস নন্দী বলেন, বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতে সেদিন কারাগারে হত্যা করা হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের চার সংগঠক স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, গুরুত্বপূর্ণ দুই মন্ত্রী ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্যালিফোর্নিয়া শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক জামিল ইসলাম বেলাল ও সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন লস এন্জেলেস সিটি আওয়ামী যুবলীগ সভাপতি আলমগীর হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্যালিফোর্নিয়া শাখা সহ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামল মজুমদার, পশ্চিম উপকূলীয় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন মফু, সহ সভাপতি আদাবর থানা আওয়ামী লীগ ঢাকা বাংলাদেশ সহ সভাপতি আলহাজ্ব মনিরুজ্জমান মনির প্রমুখ।