আহমাদ সেলিম, সিলেট প্রতিনিধি: ব্রিটেনে বাঙালি কমিউনিটির প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের নির্বাচনে সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন সাপ্তাহিক পত্রিকা সম্পাদক মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী। সংগঠনের সেক্রেটারি ও ট্রেজারার পদে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন যথাক্রমে চ্যানেল এস-এর চীফ রিপোর্টার মুহাম্মদ জুবায়ের ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের ব্যুরো চীফ আ স ম মাসুম। আ স ম মাসুম সর্বোচ্চ ২০০ ভোট পেয়ে রেকর্ড করেছেন।
২৭ জানুয়ারি রোববার ইস্ট লন্ডনের ইম্প্রেশন ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত ক্লাবের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন ও বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রাণজ উপস্থিতি ছিলো লন্ডনসহ পুরো ইউকে’র বিভিন্ন শহরের প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক তথা ক্লাব সদস্যদের। এছাড়া সন্ধ্যায় পরিবেশিত সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ভোজসভায় ক্লাবের জীবনসদস্য, দাতা সদস্য এবং শুভাকাক্সক্ষীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া এতে বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দও অংশ নেন।
নির্বাচনে দুটি শক্তিশালী প্যানেলের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর এমাদ-জুবায়ের-মুরাদ টিম ১৫টি পদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি, ভাইস প্রেসিডেন্টসহ ১০টি পদ পেয়ে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী টিম-নাহাস লাভ করে ট্রেজারারসহ ৫টি পদ। ক্লাবের নির্বাচনী ইতিহাসে এবারই প্রথম প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারি দুজনই এক টিম থেকে নির্বাচিত হলেন।
নির্বাচন পরিচালনা করেন তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন বজলুর রশিদ এমবিই। কমিশনার হিসেবে তাকে সহযোগিতা করেন এসএসবিএ-এর চেয়ারম্যান আজিজ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়া।
বেলা আড়াইটা থেকে ৬টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। রাত ১১টার দিকে ঘোষিত হয় ফলাফল। ক্লাবের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, সকলকে সাথে নিয়েই তিনি ক্লাবের কার্যক্রম এগিয়ে নেবেন। এতে তিনি বিদায়ী প্রেসিডেন্টের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সাহায্য প্রত্যাশা করেন।
বিদায়ী সৈয়দ নাহাস পাশা বিজয়ীদের অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, নির্বাচনে জয়-পরাজয় স্বাভাবিক ব্যাপার। যখন যিনি নেতৃত্বে আসবেন তাঁর নেতৃত্বে ক্লাবকে এগিয়ে নিতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
ফলাফল ঘোষণার পর লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের বিজয়ী প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারী ও ট্রেজারারসহ নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। নতুন কমিটি প্রেস ক্লাবকে আরো গতিশীল করে সংগঠনকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে তারা আশাবাদ প্রকাশ করেন। ফলাফল ঘোষণাপর্ব শেষে অনুষ্ঠানস্থলে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বিজয়ীদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এছাড়া অনেকেই পরদিন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এমদাদুুল হক চৌধুরীর সাপ্তাহিক পত্রিকার অফিসে এসে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে যান।
এছাড়া শুভেচ্ছা জানিয়েছেন লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারের পক্ষে প্রেস মিনিস্টার আশেকুন্নবী চৌধুরী, টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র জন বিগস, বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন (বিসিএ), ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স, সিলেট প্রেস ক্লাব, বাংলাদেশ সেন্টার ও গ্রেটার সিলেট কাউন্সিলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
দ্বিবার্ষিক সভার প্রথম পর্বে দুপুর ১টা থেকে শুরু হয় সাধারণ সভার আনুষ্ঠানিকতা। বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাহাস পাশার বক্তব্যের পর সেক্রেটারি মুহাম্মদ জুবায়ের বার্ষিক রিপোর্ট ও ট্রেজারার আ স ম মাসুম আর্থিক রিপোর্ট উত্থাপন করলে তা অনুমোদিত হয়। এ সময় সদস্যদের পক্ষ থেকে উত্থাপিত ক্লাবের বিভিন্ন বিষয়ে মন্তব্য, প্রশ্ন ও সমালোচনা কমিটির পক্ষ থেকে লিপিবদ্ধ ও রেকর্ড করা হয়। সকল সদস্যই নতুন ও নিজস্ব অফিস স্থাপনসহ বিভিন্ন সফল কর্মসূচীর কারণে বিদায়ী নির্বাহী কমিটির প্রশংসা করেন।
সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ল-নস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের মিনিস্টার (প্রেস) আশেকুন্নবী চৌধুরী। এ সময় নির্বাচন না করে ক্লাব কমিটি থেকে বিদায় নেয়া ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহবুব রহমান ও নির্বাহী সদস্য আমিরুল চৌধুরীকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এ সময় ক্লাবে তাদের অবদানের কথা স্মরণ করা হয়। এছাড়া সাপ্তাহিক জনমতে ২৫ বছর ক্লাবের অফিস করার সুযোগ দেয়ার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে জনমতের চেয়ারম্যান আতিক চৌধুরী, সম্পাদক নবাব উদ্দিন ও ডিরেক্টর জুনায়েদ চৌধুরীর হাতে একটি ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। মিনিস্টার (প্রেস) ও বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাহাস পাশা ও সেক্রেটারি মুহাম্মদ জুবায়ের এসব ক্রেস্ট তুলে দেন।