জাহাঙ্গীর আলম শিকদার, লন্ডন, যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি: বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, রবিবার বিলেতের বাংলাভাষী গণমাধ্যমকর্মীদের সর্ববৃহৎ সংগঠন লন্ডন-বাংলা প্রেস ক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে মুহাম্মদ জুবায়ের সভাপতি, তাইসির মাহমুদ সেক্রেটারি ও সালেহ আহমদ ট্রেজারার পদে নির্বাচিত হয়েছেন। ইস্ট লন্ডনের ইমপ্রেশন ব্যাঙ্কুয়েটিঙ হলে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে জুবায়ের-তাইসির-মুরাদ এলায়েন্সের প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি ও ভাইস প্রেসিডেন্টসহ মোট ১২’টি এবং নাহাস-মুসলেহ-সালেহ এলায়েন্সে ট্রেজারার সহ মোট ৩ টি পদে জয়লাভ করেন।
ক্লাবের ২০২৪-২০২৫ সালের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে ১৪১ ভোটে মোহাম্মদ জুবায়ের বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী সৈয়দ নাহাস পাশার প্রাপ্ত ভোট ১৩৯। সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ১৯১ ভোট পেয়ে ব্যারিস্টার তারেক চৌধুরী বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোস্তাক আলি বাবুল পেয়েছেন ৮৬ ভোট। ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ১৪৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন সায়েম চৌধুরী। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো: রহমত আলির প্রাপ্ত ভোট ১৩৬। জেনারেল সেক্রেটারি পদে টানা দ্বিতীয় বারের মতো তাইসির মাহমুদ ১২৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মোসলেহ আহমেদ ১০৩ ভোট আর জিআর সোহেল পেয়েছেন ৫৭ ভোট। অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারী পদে মো. রেজাউল করিম মৃধা ১৪৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. আব্দুল কাইয়ুমের প্রাপ্ত ভোট ১৩৬। ট্রেজারার পদে ১৫৭ ভোট পেয়ে মো. সালেহ আহমেদ বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আব্দুল কাদির চৌধুরী মুরাদের প্রাপ্ত ভোট ১২২। অ্যাসিসট্যান্ট ট্রেজারার পদে ১৫৬ ভোট পেয়ে ইব্রাহিম খলিল বিজয়ী হন।তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. সারওয়ার হোসেনের প্রাপ্ত ভোট ১০৭। অর্গানাইজিং অ্যান্ড ট্রেনিং সেক্রেটারী পদে মো. আকরামুল হোসেন ১৬৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন।তার প্রতিদ্বন্দ্বী মো. ইমরান আহমেদ পেয়েছেন ১১৩ ভোট। মিডিয়া অ্যান্ড আইটি সেক্রেটারী পদে মো. আবদুল হান্নান ১৯০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মো. মাহবুব আলী খান শূরের প্রাপ্ত ভোট ৮৫।
ইভেন্টস অ্যান্ড ফ্যাসিলিটিস সেক্রেটারী পদে রূপি আমিন ১৭৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী এস এম রহমান বেলালের প্রাপ্ত ভোট ১০২। আর পাঁচটি এক্সিকিউটিভ মেম্বার পদে সাহিদুর রহমান সোহেল ১৭৬ ভোট, ফয়সল মাহমুদ ১৭১ ভোট, মরিয়ম পলি রহমান ১৫৫ ভোট, জাকির হোসেন কয়েস ১৩৭ ভোট ও আনোয়ার শাহজাহান ১৩১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
এছাড়া এক্সিকিউটিভ মেম্বার পদে অন্য প্রার্থীদের মধ্যে, মোহাম্মদ সোবহান ১২০ ভোট, এম ই রহমান পাক্কু ১৩১ ভোট, বাতিরুল সর্দার ৮১ ভোট, হেফাজুল করিম রকিব ১২০ ভোট এবং আনিসুর রহমান আনিস ৯৭ ভোট পান।
নির্বাচনে বাংলাদেশ কেটারার্স এসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট বজলুর রশিদ চৌধুরী এমবিই, আব্দুল আজিজ ও ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়া নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন।
উল্লেখ্য, ক্লাবের কার্যনির্বাহী পরিষদের পনেরটি পদের জন্য দু’টি অ্যালায়েন্সের তিরিশ জন্য প্রার্থী এবং একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন। এই নির্বাচনে ক্লাবের দুইশ’ ৮৮ জন সদস্য গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে আগামী দু’বছরের জন্য নির্বাচিত করার সুযোগ পান।
ম্যাঞ্চেস্টার, বার্মিংহামসহ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে আগত প্রেসক্লাব মেম্বারদের স্বতঃস্ফর্ত অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত দ্বি-বার্ষিক সভা ও নির্বাচন ক্লাবের বিদায়ী সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তাইসির মাহমুদের পরিচালনায় বিগত বছরের রিপোর্ট পেশ করা হয়। পরে ক্লাবের সাধারণ সদস্যরা প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করেন।
দিনব্যাপী এই সমাবেশ দুপুর থেকে শুরু হয় এবং দ্বি-বার্ষিক সভার পর বিকেল আড়াইটা থেকে বিরতিহীন ছয়টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। তারপর ভোটগ্রহণ শেষে রাত দশটায় ফলাফল ঘোষণা করা হয়। আগামী দুবছরের জন্য নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ জুবায়ের সকলের প্রতি ধন্যবাদ জানান এবং তাঁকে ও নতুন কার্যনির্বাহি কমিটিকে সহযোগিতার জন্য সকল সাধারণ সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানান। সন্ধ্যায় ক্লাবের আজীবন সদস্য, বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাইয়েদা মুনা তাসনিম, লাইম হাউজ এমপি আফসানা বেগম, ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন, চেম্বার্স, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্টজনদের নিয়ে ডিনার ও সাংস্কৃতিক পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রয়াত ক্লাব মেম্বার আশরাফ আহমদ, সহ বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়।