এক. বিশ্বে অধিক অভিবাসী প্রেরণকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। কিন্তু সে তুলনায় রেমিটেন্স প্রবাহ যথেষ্ট কমই বলা যায়, যার অন্যতম কারণ অদক্ষ জনশক্তি প্রেরণ। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, এদেশের অভিবাসী শ্রমিকদের অর্ধেকের বেশিই অদক্ষ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে বিদেশে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক প্রেরণ বাড়লেও এদের অধিকাংশই অদক্ষ বা আধাদক্ষ। প্রাতিষ্ঠানিক ও কারিগরি প্রশিক্ষণের অভাবে তারা বিদেশ থেকে বড় অংকের অর্থ উপার্জনে ব্যর্থ হচ্ছে। অথচ ফিলিপাইনের মত দেশ বাংলাদেশের চেয়েও অর্ধেক অভিবাসী শ্রমিক দিয়ে আমাদের থেকে বেশি রেমিটেন্স আয় করছে।
দুই. বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)’র তথ্য মতে, বাংলাদেশ থেকে অভিবাসী কর্মীরা পৃথিবীর প্রায় ১৬৫টি দেশে কর্মসংস্থানে নিয়োজিত হলেও মাত্র ১০টি দেশেই ৯২ শতাংশ কর্মী গমন করে থাকে। নতুন শ্রমবাজার সেভাবে গড়ে না ওঠায় মধ্যপ্রাচ্যের প্রচলিত বাজারগুলোই এখনও আমাদের বিদেশগামীদের প্রধান গন্তব্য। কিন্তু বর্তমানে এসব বাজারে কাজের সুযোগ কমে যাওয়ায় নিত্যনুতন বাজার সৃষ্টি করতে সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করা খুবই জরুরি।
তিন. বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এদেশে কর্মসংস্থানের পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় অনেকে বিদেশে পাড়ি জমায়। বিদেশে কর্মরত এ বিপুল জনশক্তি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান উৎস। তাদের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়েই দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে। এ কারণে অর্থনীতির গতি ঠিক রাখতে অদক্ষ শ্রমিক না পাঠিয়ে দক্ষ শ্রমিক পাঠনোর উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি প্রচলিত শ্রমবাজারের বাইরে নতুন কর্মসংস্থনের ক্ষেত্র অনুসন্ধানেও গুরুত্ব দিতে হবে। এজন্য বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনগুলোকে সরকার বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে কাজে লাগাতে পারে।
পরিশেষে দেশে- বিদেশে অবস্থানরত সকলকে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা।
ঈদ মোবারক।
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন, নিরাপদে থাকুন।