প্রবাস মেলা ডেস্ক: রাজধানী বেইজিংসহ চীনের উত্তরাঞ্চলে রেকর্ডভাঙা বর্ষণে গত দু সপ্তাহে নিহত হয়েছেন ৭৮ জন, এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১৬ জন। শুক্রবার দেশটির আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ আগামী কয়েক দিনের মধ্যে একটি ঘুর্ণিঝড় এগিয়ে আসার আভাস পেয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। ফলে সামনের কয়েক দিনও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে রাজধানী বেইজিং ও তার সংলগ্ন হেবেই প্রদেশ ও আশপাশের এলাকাগুলোতে।
গত দু সপ্তাহের প্রবল বর্ষণে রাজধানী বেইজিংয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছে চীনের সরকারি সংবাদামাধ্যম সিনহুয়া। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে সিনহুয়া জানিয়েছে, গত ২৫ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় বেইজিংয়ের বিভিন্ন এলাকায় মৃত্যু হয়েছে ৩৩ জনের।
এই তালিকায় বেইজিংয়ের পরেই রয়েছে হেবেই। রাজধানীর সংলগ্ন এই প্রদেশটি থেকে এ পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এছাড়া চীনের উত্তরাঞ্চলীয় অপর প্রদেশ ঝিলিনে ১৪ জন এবং তার পার্শ্ববর্তী লিয়াওনিং প্রদেশে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সিনহুয়া। বেইজিং-হেবেইয়ের বিভিন্ন এলাকায় মৃতদেহের সন্ধানে এখনও টহল দিয়ে বেড়াচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
গত প্রায় দু মাস টানা ও দীর্ঘ তাপদাহে পুড়েছে রাজধানী বেইজিং ও তার সংলগ্ন প্রদেশ হেবেইসহ চীনের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা। জুলাইয়ের শেষ দিকে ঘূর্ণিঝড় দকসুরির প্রভাবে শুরু হয় বৃষ্টি।
গত ৩০ জুলাই থেকে বৃষ্টি শুরু হয় বেইজিং-হেবেইয়ে। তারপর ২ আগস্ট ১৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হয় বেইজিংয়ে। সেই ধাক্কা শেষ না হতেই গত ৫ আগস্ট খানুন নামের আরও একটি ঝড় আঘাত হানে চীনের উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে। ফলে চলতি আগস্টের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে বেইজিং-হেবেইয়ে।
টানা দু-সপ্তাহ ধরে প্রবল বর্ষণ, বন্যা ও ভূমিধসে প্রাণহানির পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বিপুল। বেইজিং, হেবেই, ঝিলিনের অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকার সড়কগুলো কাদা-আবর্জনায় ঢেকে গেছে।
কৃষি ও পশু-পাখির খামারগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে, অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষীতও হয়েছে বিস্তর। উপদ্রুত বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গ্রাম ও শহরতলীর অনেক এলাকায় ত্রাণ ও সহায়তা অনিয়মিত থাকায় সেসব অঞ্চলের পরিস্থিতি অনেক বেশি বিপর্যয়কর।
বন্যা উপদ্রুতদের সহায়তার জন্য চীনের সরকার ১০০ কোটি ইউয়ানের (১৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার) একটি তহবিল গঠন করেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের গৃহায়ন, ফসল ও খামারের ক্ষতিপূরণ ও কৃষিজ যন্ত্রপাতি বিতরণ বাবদ এই অর্থ ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছে সিনহুয়া।