প্রবাস মেলা ডেস্ক: ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার বিরোধিতা যেন সর্বনাশ ডেকে এনেছে জার্মানিসহ পুরো ইউরোপের জন্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জ্বালানি গ্যাস, তেল, বিদ্যুতের সঙ্গে খাদ্যসামগ্রীর দাম বাড়ছে ঝড়ের গতিতে। একই সঙ্গে ইউরোর অবমূল্যায়নে শঙ্কিত শিল্পোন্নত দেশগুলো। পাতা ফাঁদে পা দিয়ে দিশেহারা অবস্থা জার্মানিসহ পুরো ইউরোপ। রাশিয়া-ইউক্রনে যুদ্ধের প্রভাবে এমন পরিস্থিতির শিকার শিল্পোন্নত ও শক্তিধর দেশ জার্মানি। এর প্রভাব যেন পড়েছে পুরো ইউরোপে। পারমাণবিক অস্ত্র কিংবা সাইবার হামলা নয়— শুধু তেল, গ্যাস, কয়লা ও খাদ্যশস্যের রফতানি বন্ধের মাধ্যমে জার্মানি ও তাদের মিত্রদের ঘায়েল করার চেষ্টায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আর তাতেই যেন বেশ সফল রাশিয়া।
দেশটির ঘোর আপত্তি সত্ত্বেও বাল্টিক অঞ্চলে ন্যাটোর আগ্রাসী সম্প্রসারণ এবং বিলিয়ন বিলিয়ন ইউরো ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দেয়ার মাশুল যেন গুনেই শেষ করতে পারছে না জার্মানিসহ পুরো ইউরোপ। আসন্ন শীত মৌসুমে চলমান সংকট মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
জার্মান ইকোনমিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট মার্সেল ফ্রাটসশে বলেন, এ মুহূর্তে জার্মানির সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা কঠিন এক সময় পার করছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে শুধু জার্মানি নয়, পুরো ইউরোপেই খাদ্য ও জ্বালানির দাম বেড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। সব দেশের সরকারও দিশেহারা। যুদ্ধ বন্ধ না হলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে।
এ অবস্থায় দীর্ঘদিন শীর্ষস্থান ধরে রাখা ইউরো ক্রমশ দুর্বল হতে শুরু করেছে মার্কিন ডলারের বিপরীতে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দরপতনের কারণে সৃষ্ট সংকট আরও গভীর হবে। শুধু তাই নয়, জার্মানি ছাড়াও মূল্যস্ফীতির জালে আটকে গেছে আরেক শক্তিশালী প্রতিবেশী ফ্রান্স। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো ইনসি বলছে, গেল সেপ্টেম্বরের পর থেকে ফ্রান্সের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ শতাংশ। একই চিত্র ইতালির জাতীয় পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউটেরও। সমস্যার সম্মুখীন চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি ও গ্রিসও।