রানা সাত্তার, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: ছেনুয়ারা বেগমের বাড়ি রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের মুরাপাড়া গ্রামে। অসহায় এ নারীর দূর্ভোগ লাঘবে বাড়ি প্রদানের উদ্যোগ নেয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পজেটিভ বাংলাদেশ’
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পজেটিভ বাংলাদেশ’ এর দেয়া ‘স্বপ্নের বাড়ি’ হাসি ফুটিয়েছে রামুর হতদরিদ্র ছেনুয়ারা বেগমের মুখে। প্লাষ্টিকের ছাউনী দেয়া ঝুপড়ি ঘরে নানা প্রতিকূলতা নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন সহায়-সম্বলহীন এ নারী।
অবশেষে নির্মাণ হওয়া বাড়িটি ছেনুয়ারা বেগমের কাছে হস্তান্তর করেন রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা। এসময় তিনি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছেনুয়ারা বেগমকে অর্থ সহায়তা দেন।
বাড়ি হস্তান্তরকালে জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স, এডভোকেট সামসুদ্দোহা নাসিম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পজেটিভ বাংলাদেশ’ এর কক্সবাজার প্রতিনিধি মিজান উল্লাহ সিকদার, কক্সবাজার বাড়ি ডোনার সোসাইটির সদস্য রহিম উদ্দিন সোহেল, এলাকার সর্দার মোকতার আহমদ ও নুরুল হক সহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা বলেন, হতদরিদ্র-গৃহহীন মানুষের কল্যাণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি পজেটিভ বাংলাদেশ এর মতো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিত্তবান ব্যক্তিদেরও দরিদ্র মানুষের গৃহ নির্মাণের মতো মানবিক কাজে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, পজেটিভ বাংলাদেশ হয়তো সব অসহায়কে ঘর দিতে পারবে না। কিন্তু তাদের স্বপ্নের বাড়ি নির্মাণ প্রদানের এ উদ্যোগ সবার জন্য অনুকরণীয় হলো। এজন্য তিনি পজেটিভ বাংলাদেশ এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকল স্বেচ্ছাসেবীদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স জানান- অসহায় নারীকে স্বপ্নের বাড়ি প্রদানের উদ্যোগ শ্রেষ্ট মানবিক কাজ। এ ধরনের মহৎ কাজ করায় পজেটিভ বাংলাদেশ এর সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পজেটিভ বাংলাদেশ’ এর কক্সবাজার প্রতিনিধি মিজান উল্লাহ সিকদার জানিয়েছেন, এ সংগঠনের সদস্যদের উদ্যোগে হতদরিদ্র লোকজনকে ৩টি স্বপ্নের বাড়ি হস্তান্তর করা হয়েছে। যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো জানান, এ সংগঠনের উদ্যোগে সন্তানহীন পিতা-মাতাকে আর্থিক সহায়তা বা বাড়ি নির্মাণ, অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, শীতবস্ত্র বিতরণ, দরিদ্র ব্যক্তিদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান, এতিম শিক্ষার্থীদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, দরিদ্র-মিসকিনদের ঈদ সামগ্রী বিতরণ, যে কোন দূর্ঘটনা কবলিত ও বিপদগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা প্রদানসহ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজ করা হয়।
জানা গেছে, হতদরিদ্র ছেনুয়ারা বেগমের স্বামী মোহাম্মদ হোছন ২ বছর আগে মারা যান। ১ ছেলে ১ মেয়ের মধ্যে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেটির বয়স এখনো ১০ বছর। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে শিশু সন্তানকে নিয়ে চরম অভাব অনটনে দিন কাটাচ্ছিলেন ছেনুয়ারা বেগম। বিষয়টি জানার পর ছেনুয়ারা বেগমকে নতুন বাড়ি দেয়ার উদ্যোগ নেয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পজেটিভ বাংলাদেশ’।