হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন পার্লামেন্টারিয়ান, সাবেক মন্ত্রী, বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত স্মরণে আয়োজিত সভায় বক্তারা বলেছেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত একজন সাহসী ও সৎ রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি ছিলেন গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর। সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত শুধু একটি নাম নয় একটি ইতিহাস। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সংসদ আজীবন মনে রাখবে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে। আজীবন বাংলার গণমানুষের মাঝে বেঁচে থাকবেন তিনি। কিন্তু জীবদ্দশায় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। কথিত অর্থ আত্মসাতের কলংক মাথায় নিয়ে তিনি চির বিদায় নিয়েছেন। যা ছিল বাঙালী জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, রোববার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে ব্রঙ্কসের আল আকসা রেষ্টুরেন্টে জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত স্মরণে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত স্মৃতি পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র এ সভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ। প্রধান আলোচক ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত স্মৃতি পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা, দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা তোফায়েল চৌধুরী।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত স্মৃতি পরিষদের আহ্বায়ক রুহেল চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সদস্য সচিব সুব্রত তালুকদারের পরিচালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন লেখক-মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বিশ্বাস, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাসিব মামুন ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্মৃতি পরিষদের উপদেষ্টা আব্দুর রহিম বাদশা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক ও উপদেষ্টা হাজী এনাম, বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এন মজুমদার, নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শেখ আতিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শাহিন আজমল, মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুর আহমেদ, উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম মুন্সী, অধ্যাপক সাইয়্যিদ মুজিবুর রহমান, হৃদয়ে বাংলাদেশ’র সভাপতি সাইদুর রহমান লিংকন, সাংবাদিক মুহাম্মদ ফজলুর রহমান, সাংবাদিক মনোয়ারুল ইসলাম, আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা ওবায়দুল্লাহ মামুন, অধ্যাপিকা হুসনে আরা, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাফায়েত চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র জাসদের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম জিকু, যুবলীগ নেতা জামাল হুসেন, জামাল আহমেদ, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট সাগর রায়, মিজান চৌধুরী, শ্যামল কান্তি চন্দ, ওবায়েদ আজমান চৌধুরী প্রমূখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন আহমেদ সোহাগ।
সভায় বক্তারা বলেন, সিলেট আজ নেতৃত্ব শূণ্যতায় ভূগছে। আর সেই শূণ্যতায় আমরা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের অভাব অনুভব করছি। তিনি বলেন, শুধু সিলেটবাসীই নয়, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সংসদ আজীবন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে মনে রাখবে। সভায় বক্তারা বলেন, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন সাধনায় হয়ে ওঠেছিলেন গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রাণপুরুষ। সম্প্রীতির রাজনীতির মডেল। সংসদীয় রাজনীতিতে দখল করে নিয়েছেন অনন্য মর্যাদার আসন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। বাংলার আপামর জনসাধারনকে অন্যায় অত্যাচার, বঞ্চনা বৈষম্য ও শোসন নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করতে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
তোফায়েল চৌধুরী তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে বলেন, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত কোন দিনও নীতি ও আদর্শের সাথে আপোষ করেন নি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সামরিক শাসনামলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে তৎকালীন সামরিক সরকার তাদের মন্ত্রী পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল। কিন্তু তিনি ঘৃণাভরে তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
অনুষ্ঠানে সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক সহ নানা শ্রেণী পেশার বিপুল সংখ্যক প্রবাসী উপস্থিত ছিলেন।