প্রবাস মেলা ডেস্ক: ইউক্রেনে ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা। যা আগে থেকেই নির্ধারিত। এরই মধ্যে অনেকেই নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছেন। কিন্তু যুদ্ধের অজুহাতে নির্বাচন আয়োজন করতে চান না প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলছেন, যুদ্ধের মধ্যে ২০২৪ সালের নির্বাচন নিয়ে কথা বলা ‘দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়’।
সোমবার (৬ নভেম্বর) দেশবাসীর উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তায় নির্বাচনের সম্ভাবনা কার্যত নাকচ করে দেন জেলেনস্কি। বলেন, ইউক্রেনকে এখন অবশ্যই সামরিক চ্যালেঞ্জের দিকে মনযোগ দিতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তার ভাষ্য, ‘আমরা সবাই জানি যে, দেশে এখন যুদ্ধাবস্থা। এখন আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। এই মুহূর্তে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনায় যুক্ত হওয়া একেবারেই দায়িত্বজ্ঞানহীন।’
তিনি আরও বলেন. ‘আমাদের বোঝা দরকার যে, এখন প্রতিরক্ষার সময়, যুদ্ধের সময়, যার ওপর রাষ্ট্র ও এর জনগণের ভাগ্য নির্ভর করছে। আমি বিশ্বাস করি যে এই সময় নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত নয়।’
২০১৯ সালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সাবেক কৌতুকাভিনেতা ভলোদিমির জেলেনস্কি। ক্ষমতার তৃতীয় বছরের মাথায় ২০২২ সালের ফ্রেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের মধ্যদিয়ে যুদ্ধে জড়ায় ইউক্রেন। যে যুদ্ধ টানা দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে।
যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে এখন মার্শাল ল’ তথা সামরিক আইন কার্যকর রয়েছে। আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, যুদ্ধ প্রলম্বিত হওয়ায় নির্বাচন আয়োজনের জন্য একটি বিশেষ বিধান আনা যায় কিনা তা জেলেনস্কি বিবেচনা করেছেন।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরেই তিনি বলেছিলেন, প্রয়োজন হলে তিনি নির্বাচন আয়োজন করতে প্রস্তুত। এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের ভোট পর্যবেক্ষণ করার অনুমতি দেয়ার কথাও জানিয়েছিলেন।
গত সপ্তাহেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেন যে প্রেসিডেন্ট এমন একটি সময়ে যখন দেশের বিশাল একটা অঞ্চল যুদ্ধাক্রান্ত, নির্বাচন অনুষ্ঠানের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো বিবেচনা করছেন।
এদিকে ইউক্রেন যখন যুক্তরাষ্ট্রের মতো পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোর সমর্থন ধরে রাখার চেষ্টা করছে, তখন মার্কিন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহামের মতো রাজনীতিক গণতন্ত্রের প্রতি ইউক্রেনের প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত নির্বাচন আয়োজনের আহ্বানও জানাচ্ছেন তারা।
কিন্তু যুদ্ধের অজুহাত দেখিয়ে এখন নির্বাচন এড়ানোর চেষ্টা করছে জেলেনস্কির। তার দাবি, এখন নির্বাচনের ‘সঠিক সময় নয়’। ইউক্রেন গণতান্ত্রিক দেশ দাবি করলেও নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছেন তিনি।