প্রবাস মেলা ডেস্ক: ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির দিনই অবরুদ্ধ গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এতে একই পরিবারের ৫২ সদস্য নিহত হয়েছেন। খবর আলজাজিরার। লন্ডনে সফররত ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বুধবার (২২ নভেম্বর) সকালে উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি বাহিনী এ বিমান হামলা চালায়। এতে নিহত হয়েছেন ৫২; এরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। রিয়াদ আল-মালিকি আরও বলেন, নিহতদের নামের তালিকা তার কাছে আছে। দাদা থেকে নাতি – তিন প্রজন্মই পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
অন্যদিকে দক্ষিণ গাজা থেকে আলজাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজজুম বলেছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার পরও বুধবার গাজায় ব্যাপক বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। বোমা হামলায় খান ইউনিসের একটি আবাসিক ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি বলেন, উত্তর গাজা থেকে পালিয়ে নিরাপদ ভেবে দক্ষিণ গাজায় আশ্রয় নিয়েছিলেন ফিলিস্তিনিরা। কিন্তু এখানেও একই অবস্থা। প্রতিনিয়ত তাদের ইসরাইলি বোমা হামলার শিকার হতে হচ্ছে।
দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলার পর গত সপ্তাহে কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতায় ইসরাইলের কাছে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল কাতারে অবস্থানরত হামাসের হাইকমান্ড। বুধবার (২২ নভেম্বর) এ যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এর পরপরই হামাসের পক্ষ থেকে টেলিগ্রামে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। বিবৃতি দিয়েছে ইসরাইল সরকারও। এসব বিবৃতি থেকে যুদ্ধবিরতির কিছু শর্তের কথা জানা গেছে।
এই যুদ্ধবিরতির প্রধান শর্ত – গাজায় চারদিনের যুদ্ধবিরতি দেবে ইসরাইল। এছাড়াও হামাসের হাতে বন্দি ৫০ জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে বন্দি ১৫০ ফিলিস্তিনির মুক্তিও এ চুক্তির অন্যতম প্রধান শর্ত; যা বুধবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।
এদিনই হামাসের কর্মকর্তা মুসা আবু মারজুক আলজাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে বহুলপ্রত্যাশিত সাময়িক যুদ্ধবিরতি বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়ার কথা।
বৃহস্পতিবার ইসরাইলের নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান জাকি হানেগবি বলেন, ‘শুক্রবারের আগে কোনো ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেবে না হামাস।’
গাজায় বৃহস্পতিবার থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও ইসরাইলি এ কর্মকর্তার বক্তব্যের পর বিরতি ঠিক কবে থেকে শুরু হবে, তা এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।