হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের নামে ড. সিদ্দিকুর রহমান পত্র পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে বিভিন্ন স্টেট ও সিটিতে নতুন কমিটি গঠনের জন্যে দিনক্ষণ ঠিক করছেন যা যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ ও আওয়ামী পরিবারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ইতোমধ্যে ড. সিদ্দিকুর রহমান মেট্রো ওয়াশিংটন ডিসি আওয়ামীলীগের তথাকথিত নতুন কমিটি গঠন করতে গেলে ঐ স্টেটের নেতাকর্মীরা তা প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দিয়েছে, যা তারা মিডিয়াতে দেখতে পেয়েছে। (যুগান্তর ৩ জুন ২০২২)। একই ঘটনা ঘটেছে অঙ্গরাজ্য জর্জিয়াতে। সেখানও কমিটি গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে নেতাকর্মীরা মধ্যে চরম অসন্তোষ এবং এক পর্যায়ে মারপিট ও হৈচৈ মধ্যে দিয়ে পণ্ড হয় তথাকথিত কমিটি গঠন প্রক্রিয়া (বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১৭ জুন২০২২)।
২০১১ সালে গঠিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের বয়স এখন ১১ বছর। যার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে অনেক আগেই। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তৎকালীন কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক ড. আবদুল সোবহান গোলাপ কর্তৃক দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গ্রান্ড হায়াৎ হোটেলে শতাধিক নেতাকর্মীর সামনে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের অবিলম্বে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের জন্যে ড. সিদ্দিকুর রহমানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী লংআইল্যান্ড সিটির একটি হোটেলের কনফারেন্স রুম ভাড়া করে তিনি মিটিং আহ্ববান করেন। উদ্দেশ্যমূলকভাবে তার কতিপয় মাস্তান ও ভাড়াটে সিকিউরিটি দিয়ে সেই মিটিং পন্ড করে দেওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ ও আওয়ামী পরিবারের ভাষায়। পরবর্তীতে জ্যাকসন হাইটসে ডাকা কার্যকরী কমিটির আরেক সভায়ও তিনি গোলযোগ সৃষ্টি করে সভা মূলতবী করেন। অদ্যবদি তিনি সেই মুলতবী সভা আর করেননি এবং সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে সম্মেলনের মাধ্যমে নুতন কমিটি গঠনের কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নাই।
বর্তমানে ২০১১ সালে গঠিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ কমিটির বৈধতা নিয়ে চরম সংকটাপন্ন অবস্থা বিরাজ করছে। কারন -ঐ কমিটির অধিকাংশ সদস্যই কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বের (সিদ্দিক-সামাদ) প্রতি আস্থাশীল নয়। ২০১৮ সালে হিলটন হোটেলের বলরুমে সভাপতি শেখ হাসিনার সামনে হাজার হাজার নেতা–কর্মী ইতিমধ্যেই ‘নো-মোর সিদ্দিক’ ধ্বনি তুলে তাকে বর্জন করেছে এবং কমিটির অনেক সদস্যই ইতিমধ্যে তার পক্ষত্যাগ করেছে। অনেক সংখ্যক সদস্য দীঘদিন যাবৎ অনুপস্থিত বা দেশের বাহিরে বছরের পর বছর অবস্থান করছে। এছাড়াও সংগঠনের কনভেনশন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি তার অধিনস্থ কমিটির কোন সভায় সভাপতিত্ব করলে ঐ কমিটি অটোমেটিক অবলুপ্ত হয়ে যায়। আওয়ামীলীগ জন্মের পর থেকেই এই প্রথা আওয়ামীলীগ অনুসরণ করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের ক্ষেত্রেও এরকম ঘটনা সংঘটিত হয়েছে এবং আজ অবধি সিদ্দিকুর রহমান আর কোন সভায় সভাপতিত্ব করতে পারেননি। সুতরাং এ সকল বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের বর্তমান কমিটির আর কোন বৈধতা আছে বলে তারা মনে করেন না।
ড. সিদ্দিকুর রহমান যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের নামে যা কিছু করছেন তা সম্পূর্নই তার মনগড়া, স্বেচ্ছাচারিতা ও একক সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি করে থাকেন এবং এর সাথে কার্যকরী কমিটির সদস্য বা কেন্দ্রীয় কমিটির বা হাইকমান্ড কারোই কোন সম্পর্ক নাই বলে বিক্ষোভদের দাবী। যেমন অতি সম্প্রতি তিনি দেশে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের দিন বিশ্ব ব্যাংকের সামনে আনন্দ সমাবেশ করার কমসূচী দিয়ে প্রচার শুরু করেছিলেন। যা ছিল অত্মঘাতী। অবশ্য পরবর্তীতে নেতা-কমীদর চাপের মুখে সেই কমসূচী বাতিল করেন এবং স্টেশন ত্যাগ করেন। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের হাজার হাজার নেতা–কর্মীরা ড. সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ‘নো-মোর সিদ্দিক’ ধ্বনি তোলার পর থেকে আজ পর্যন্ত সকল অসাংগঠনিক, অনিয়ম ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাজ ও দলের নীতি ও আদর্শ বিরোধী কাজের কারনে দলের হাইকমান্ডের সাথে তার কোন প্রকার যোগাযোগ নাই বলেই তারা জানান।
এমত: পরিস্থিতিতে, মেয়াদোত্তীর্ণ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের নুতন কমিটি গঠন না হওয়ার পূর্বে তার অধিনস্থ বিভিন্ন স্টেট ও সিটির নতুন কমিটি গঠন সম্পূর্ণ অন্যায়, অবৈধ, ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। যারা স্টেট ও সিটি আওয়ামীলীগের নুতন কমিটি গঠনের অবৈধ প্রক্রিয়া পরিচালনা করছেন তাদের এই প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন বিক্ষোভরত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ নেতাকর্ম। তারা বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ব্যতীত এই প্রক্রিয়া বন্ধ না হলে এর জন্য যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে তার জন্য ড. সিদ্দিকুর রহমান-আব্দুস সামাদ সম্পুর্ণ দায়ী থাকবে। তারা সকলের অবগতির জন্য উল্লেখ করেন যে, ২০১৯ সালে কানাডার টরেন্টোতে ড. সিদ্দিকুর রহমান বিভিন্ন স্টেটে নতুন কমিটি গঠন করে ৩৬,০০০ ডলার তুলেছেন নেত্রীর সামনে এ কথা উল্লেখ করলে নেত্রী সকলের সামনে তাকে ধমক দিয়ে বলেন ‘কার নির্দেশে তিনি নতুন কমিটি গঠন করে এত টাকা তুলেছেন? ড. সিদ্দিকুর রহমানকে জননেত্রী শেখ হাসিনা অবিলম্বে সকল টাকা ফেরৎ দেওয়ার নির্দেশ দেন। অথচ আজ পর্যন্ত ড. সিদ্দিকুর রহমান সেই টাকা কাউকেই ফেরৎ না দিয়ে নেত্রীর নির্দেশ অমান্য করছেন এবং অবৈধ কমিটি গঠন করে হাজার হাজার ডলার চাঁদা তুলছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তারা ড. সিদ্দিকুর রহমানের এহেন অবৈধ ও অসাংগঠনিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার জন্যে অনুরোধ জানাচ্ছেন। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের আগামী কেন্দ্রীয় সম্মেলন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশে-বিদেশে দলের মধ্যে নতুন করে অগঠনতান্ত্রিক কাজের মাধ্যমে বিভেদ-বিভ্রান্তি না ছড়ানো এবং ঐক্যবদ্ধভাবে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী দলের কাজ করে চলার জন্য সকলের প্রতি আহ্ববান জানিয়েছন।
বিবৃতিদাতা নেতৃবৃন্দরা হলেন: সর্বজনাব সৈয়দ বসারত আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. প্রদীপ রন্জন কর, হাজী শফিকুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মহসীন আলী, সিনিয়র সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন, মোস্তাইন দারা বিল্লাহ, ড. খন্দকার মনসুর, ড. সৈয়দ আবু হাসনাত, রমেশ চন্দ্র নাথ, তোফায়েল চৌধুরী, মোহাম্মদ হানিফ, বদরুল হোসেন খাঁন, আইরিন পারভিন, আবদুর রহিম বাদশা, চন্দন দত্ত, প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, এ্যাডভোকেট শাহ মো: বখতিয়ার আলী, মনসুর খান, এম এ করিম জাহাঙ্গীর, কাজী কয়েছ আহমেদ, ডা. এ বাতেন, মিসবাহ আহমদ, ফরিদ আলম, শরিফ কামরুল আলম হীরা, সাংবাদিক হেলাল মাহমুদ, ওসমান গনি, বিশসজিৎ সাহা, নাসিম পারভীন পারু, সুহাস বডুয়া হাসি, শরাফ সরকার, কায়কোবাদ খাঁন, রেজাউল করিম চৌধুরী, আজাহারুল ইসাম লিটন, বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুল হাসান চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আকবর রীচি, বীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশীদ আনোয়ার বাবলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাঈদুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা জাকির হোসেন হিরু ভূইয়া, গোলাম কুদ্দুস, জালালউদ্দিন জলিল, মোহম্মদ আকতার হোসেন, মঞ্জুর চৌধুরী, খসরুল আলম, রুমানা আকতার, শেখ জামাল হোসেন, আবুল কাসেম ভূইয়া, সিরাজুল ইসলাম সরকার, ইফজাল চৌধুরী, টি মোল্লা, উৎফত মোল্লা, শাহরিয়ার শরীফ, জাহাংগীর কবির, নাদের আলী মাষ্টার, নুরে আজম বাবু, মো: জামাল বস্ক, খন্দকার মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন মোল্লা, আতাউর রহমান তালুকদার, শহিদুল ইসলাম, ফরিদা আরভি, একে চৌধুরী, হেলেমউদ্দিন, নূরুল ইসলাম, মো: আলীমউদ্দিন, শাহিন কামালী, আজাদুল কবির, রবিউল ইসলাম, শহেব আহমদ, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, মাসুদুর রহমান, অমিত হাসান মুরাদ, নুর হোসেন ফরহাদ, আজমান আলী, আলীম উদ্দিন, মামুন হোসাইন, শুপি চৌধুরী, লায়েক আহমদ, মহিবুর রহমান, আমিনুল মোর্শেদ হক, সাঈদউল্লা সাঈদ, সাহে আলম ভূইয়া, মীর কাসেম, মোশারফ হাওলাদার, সাঈদ আলী, আকবর আলী, নূরুল আমীন ভূইয়া, সাফায়েত খান, কোহিনুর বেগম ও শারমিন তালুকদার প্রমুখ।