হাকিকুল ইসলাম খোকন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি: সুরাঙ্গন মিউজিক স্কুলের আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন শহরে অনুষ্ঠিত হলো বসন্ত উৎসব ও বর্ষবরণ। মাতৃভূমি ছেড়ে যাঁরা প্রবাসে বসবাস করেন তাঁদের কাছে বসন্ত উৎসব ও বর্ষবরণ এক তাৎপর্যপূর্ণ। সুরাঙ্গনের কর্ণধার রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রুপা ঘোষের অপরিসীম উদ্যোগ ও অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ও শুভানুধ্যায়ী বন্ধুরা মিলে উপহার দিল এক মনোজ্ঞ সংগীতসন্ধ্যা।
এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নতুন প্রজন্মকে নিজস্ব সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। যাতে প্রবাসের মাটিতে আমাদের নতুন প্রজন্ম বাংলা সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে পারে। চিরন্তন বাংলা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার অক্লান্ত প্রয়াসে তাঁর এ প্রচেষ্টা। সুরাঙ্গনের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় দুই বাংলার শিল্পীদের নিয়ে এই উৎসব ছিল বর্ণিল।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নৃত্য, গান ও কবিতার ছন্দে বিদায় জানানো হয় প্রকৃতির ঋতুরাজকে এবং স্বাগত জানানো হয় নতুন বছরকে। প্রাণে খুশির দোলা দিয়ে ওঠে রুপা ঘোষের অপূর্ব পরিবেশনা ‘আকাশ আমায় ভরল আলোয়’।
কখনো ভাষ্য, কখনো একক বা দলীয় সংগীত, আবার কখনো একক বা দলীয় নৃত্যে অনুষ্ঠানটি সত্যিই আনন্দের বার্তা এনে দিয়েছিল। তবলায় ছিলেন রাজা বাঙ্গা ও নিরঞ্জন রায়। মন্দিরায় ছিলেন বিদ্যুৎ ঘোষ ও বেহালায় বিপ্লব সমাদ্দার। সুমধুর ভাষ্য পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটিকে প্রতিটি শ্রোতার কাছে অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী করে তুলেছিলেন বিপ্লব সমাদ্দার ও নুরীন বেনজীর খান। এই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন মীলা সেনগুপ্ত।

অনুষ্ঠানে বসন্তের রঙে মন রাঙাতে সমবেতভাবে গাওয়া হয় ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও’ এবং শীতের বিবর্ণতা দূর করে বসন্তের সুবাস ছড়িয়ে বসন্ত বন্দনা করে সর্বশেষে নতুন বছরকে আমন্ত্রণ জানিয়ে গাওয়া হয় ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’।
নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন সুপ্রদীপ্তা দত্ত, জয়ীতা দাশগুপ্ত, শান্তা তলাপাত্র ও শাওন সরকার। এই অনুষ্ঠানে নৃত্য ও গানে ছোটদের মধ্যে অংশগ্রহণ করেছিল তিথি, আমরিন, আনাইয়া, অদিত্য, আলী, শরণী, ইশাণী, অঙ্কিতা, আনুশকা, মানভী, দেব, শ্রী, অভিশ্রী, হেরা, যশ, বিনিতা, তিন্নি, শাওন, সহিনী, তেরেসা, নাইজা ও আঙ্কিতা তালুকদারসহ তরুণ প্রজন্মের আরও অনেকে। বড়দের মধ্যে ছিলেন টুটুল, পারভীন, শীলা, রুমকী, রোখসানা, অর্ঘ্য, পপি, রুনা, দীনা, অমিতাভ, রুমেল, দেবযানী, ফারিয়া, উদয়, শুদেষ্ণা, অমিত সরকার, আবিদা, ডোনা, মীনাক্ষী, ঝর্ণা, নন্দিনী, পূজা, সৌমিক, সাহেদ ও খলিলসহ আরও অনেকে।
অসংখ্য ধন্যবাদ সুরাঙ্গনের কর্ণধার রুপা ঘোষ ও অনুষ্ঠানের আয়োজকদের। তাঁদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা প্রতিবছর এমন অনবদ্য অনুষ্ঠান যেন উপহার দেন। প্রবাসের অনাত্মীয় পরিবেশে অনুষ্ঠানটি উপস্থিত সবার মধ্যে একটি প্রিয় উৎসব ও বাঙালিয়ানার স্মারক হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।