প্রবাস মেলা ডেস্ক: ভারতের মণিপুর রাজ্যের জাতিগত সহিংসতাকে কেন্দ্র করে সংসদ অচল রেখেও কাজ হয়নি। তাই, এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারে বিরোধীরা। বিরোধীদের দাবি ছিল, মণিপুর নিয়ে সংসদে বিতর্ক করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিবৃতি দিতে হবে। কিন্তু, সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, মণিপুর নিয়ে তারা বিতর্কে রাজি। তবে, প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি দেবেন না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিতর্কের জবাব দেবেন। বিরোধীরা সেটি মানতে চান না। বিরোধী মানে ২৬ দলের ‘ইন্ডিয়া’ জোট, যেখানে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম, ডিএমকে, জেডিইউ, জেএমএম, এনসিপি, আরজেডি, ন্যাশনাল কনফারেন্স ও পিডিপির মতো দলগুলো আছে।
সূত্র জানায়, এত তড়িঘড়ি করে অনাস্থা প্রস্তাব আনাটা হলো বিরোধীদের রাজনৈতিক কৌশলের অঙ্গ। পাশাপাশি মোদি-শাহের কৌশল ভেস্তে দেওয়ারও অস্ত্র। আসলে বিরোধীরা সংসদ অচল করে রাখার পর মোদি-শাহ ঠিক করেছেন, এবার সরকার তাদের বিলগুলো পাস করিয়ে নেবে। এবার সংসদে ৩১টি বিল পাস করাতে চায় সরকার। তার মধ্যে দিল্লি নিয়ে বিতর্কিত অর্ডিন্যান্সকে আইনে পরিণত করা সংক্রান্ত বিল আছে। যে অর্ডিন্যান্সে উচ্চপদস্থ আমলা নিয়োগের ক্ষমতা রাজ্য সরকারের হাত থেকে নিয়ে লেফটন্যান্ট গভর্নর বা এলজিকে দেওয়া হয়েছে। আম আদমি পার্টির অনুরোধ মেনে ইন্ডিয়া জোটের সব বিরোধী দল ঠিক করেছে, এই অর্ডিন্যান্স সংক্রান্ত বিলের বিরুদ্ধে তারা একজোট হয়ে ভোট দেবে। এই বিল তারা সর্বশক্তি দিয়ে রোখার চেষ্টা করবে। লোকসভায় তারা সংখ্যালঘু। কিন্তু, রাজ্যসভায় তারা এর বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়ে সরকারকে চাপে রাখতে চাইছে।
এই অবস্থায় অনাস্থা প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অনাস্থায় বিরোধীদের আক্রমণের প্রধান বিষয়ই হবে মণিপুর। অনাস্থা প্রস্তাব আনলে আগে তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে জবাব দিতে হবে। তখন মণিপুর নিয়ে বলতে বাধ্য হবেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর তিনি যা বললেন, তা নিয়ে সংসদের বাইরেও আক্রমণ শানাবে বিরোধীরা। এদিকে, বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, বিরোধীরা জোটের নাম দিয়েছে ইন্ডিয়া, তাতে কোনো লাভ নেই। এর আগে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ‘ইন্ডিয়া’ নাম দিয়ে ভারতকে শোষণ করেছে। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের নামেও ‘ইন্ডিয়া’ আছে। তাই ‘ইন্ডিয়া’ নাম দিলেই কেউ ভালো হয়ে যায় না বা বাড়তি গুরুত্ব পায় না।
বিরোধী সংসদ সদস্যদের একাংশ রাতভর গান্ধীমূর্তির সামনে ধরনা দিয়েছেন। এটা ছিল মণিপুর নিয়ে বিরোধীদেড় বিক্ষোভের অঙ্গ। প্রায় প্রতিদিন সকালেও গান্ধীমূর্তির সামনে ইন্ডিয়া জোটের দলগুলোর সংসদ সদস্যরা বিক্ষোভ করছেন।