জাহাঙ্গীর আলম শিকদার, লন্ডন, যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি: প্রবাসে থাকি কিন্তু চোখের পর্দায় ভেসে আসলো যা গত ৯ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। তাইতো চোখের পাতা দু’টো এক করা মসকিল হয়ে যায়, কেননা চোখতো হৃদয়ের আয়না, যখনি দেখি খ্রিস্টীয় ২০২৩-২০২৪ শিক্ষা বর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রের শেরে-ই বাংলা কৃষি বিদ্যালয়, ঢাকা এর শিক্ষার্থী হোমাইরা ইসলাম (তার বাবা মাসুদ রানা) ছোঁয়ার পরীক্ষা খুব ভালোই চলছিল। নিয়তি বাম তাই পরিক্ষারত অবস্থায় তিন জন শিক্ষার্থীর OMR শীট কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে পর্যবেক্ষক ডাক্তার নাফিজা। তার মধ্যে শিক্ষার্থী হোমাইরা ইসলাম ছোঁয়াও ক্ষমা পায়নি। কারণ হল স্কার্ফ পরা যেই শিক্ষার্থীর কাছে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস পাওয়া যায় তারই রাগান্বিত বা ক্ষোভের দুর্ভাগ্যের ফসল হোমাইরা ইসলাম ছোঁয়া সহ আরেকজন শিক্ষার্থী। দেশের ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে খবর যতই দেখেছি হোমাইরা ইসলাম ছোঁয়ার কান্না আমাকে কেন-কোন বন্ধু বা বড় ভাইদের কাছে বললে এমন অনেকেই কেঁদেছে। একজন মা কখনো তার সন্তানের অমঙ্গল কামনা যেমন করেনা, তেমনি একজন মানুষ গড়ার কারিগর যিনি শিক্ষক তিনি যে কখনো করে, একথা একেবারেই বিরল। যদি মা ভুল করে রাগের বশঃবর্তী হয়ে সাথে সাথে না হউক তার সান্তনা বা সতর্ক রাখাটা দোষের কিছু নয়। কিন্তু যেখানে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত একটা সুন্দর জীবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, যেখানে একজন ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীর, সেখানে অটুট থাকাটা একটা পাষাণ হৃদয় কিংবা পাথরের সামিল মনে করি।
বিচারের রায় নিরবে কাঁদে কি হবে বিচার চেয়ে ? কারণ দোষ না করেও যেখানে দোষী, আবার মারধরে অভিযুক্ত ব্যক্তিই তদন্ত কমিটির প্রধান! এখানে কি ভাল কিছু আশা করা যায় ? তবে একজন বাংলাদেশি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জন যিনি বর্তমানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, পর্দা ঠেলে তার কাছে এই পরিবার ও তার শুভাকাঙ্খীরা গিয়েও আশ্বাসই মিলেছে ? মিলেনি হোমাইরা ইসলাম ছোঁয়াদের ভাগ্যের পরিবর্তন। যে পরিবর্তন এনে দিবে সেবা করে দেশ ও দেশের মানুষের একজন ভাল ডাক্তার হয়ে।
যতদিন এই নাফিজারা থাকবে ততদিন এই সুফল কামনা করাও দোরারহ! কারণ তার বিরুদ্ধে তাদের সুস্থ্য তদন্ত ও বিচার পাওয়া আকাশ কুসুম কল্পনা। কারণ তাদের বেতনটাই হয়তবা মুখ্য, তাদের চিন্তা চেতনা উন্নত বহিঃর্বিশ্বের সাথে কোন মিল বা ধ্যান-ধারণা কিংবা বাস্তবতার মিল কম, কেননা এরা মুখস্ত বিদ্যার পন্ডিত হয়তোবা।
যে দেশে ভাল মানুষের কিংবা মেধাবীদের কদর থাকেনা, সেদেশে ভাল মানুষও জন্মায়না- মনিষীদের কথা। কিন্তু কোন লাভ নেই খবরের পাতায় আর ইথারে ভাসিয়ে দিয়ে টেলিভিশনের পর্দায় কিংবা মানব বন্ধনে! যতদিন না তাদের বহিঃর্বিশ্বের উন্নত কোনো দেশের শিক্ষার সাথে কমিউনিকেশন না রাখে, ততদিন এই নাফিজারা অপরিপক্ক জীবন ঝরাবে এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। প্রবাসে থেকেও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে যখন দেখি এই ঘটনা সত্যি কান্না চাপা রাখা মশকিল। তারপরেও প্রবাস থেকে অনুরোধ থাকবে মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে আমাদের, একজন অভিভাবক হয়ে একটা সুন্দর জীবনের শুভ কামনা ও আশীর্বাদ করে ক্ষমা করে দিলে ব্যক্তি হোমাইরা ইসলাম ছোঁয়া এবং তার পরিবার এমনকি দেশ ও দেশের মানুষের সেবায় হয়ে উঠবে তার জীবনের সমস্ত মস্তিস্ক। কেননা ৪০ মিনিটে যে শিক্ষার্থী তার এমসিকিউ ৭৫ শতাংশ ভরাট করতে পারে নিশ্চয়ই সে একজন ভাল শিক্ষার্থী। তাই আমরা প্রবাস থেকে প্রবাস মেলা পত্রিকার মাধ্যমে আকুল আবেদন করছি আবারো, বর্তমানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয় এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ করে একটি প্রতিভা নষ্ট করা থেকে সহায়ক হওয়ার।
উল্লেখ্য, কদিন ধরেই টক অব দ্য কান্ট্রি শের-ই বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮২৩ নম্বর রুম। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার সময় সেদিন কী ঘটেছিল এ হলে?
অভিযোগকারী পরীক্ষার্থীর দাবি, একজন পরিদর্শক তার পাশের শিক্ষার্থীর কাছে ডিভাইস পেয়ে সন্দেহজনকভাবে তার খাতা নিয়ে ওএমআর ছিঁড়ে ফেলেন। পরে ফেরত দিলেও তখন আর সময় ছিল না তার হাতে।