মনির হোসেন, মালে, মালদ্বীপ প্রতিনিধি: সাগরের পানির নিচে বেডরুম, যেখানে শুয়ে শুয়েই আপনি দেখতে পারবেন চারপাশে শুধু নীল জলরাশি। সেখানেই ছিমছাম একটি কক্ষে বিছানায় শুয়ে মাছের ঝাঁকসহ অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী দেখছেন। কখনও তাদের উদ্দেশ্যে হয়তো দু-একটি কথাও বলছেন মনের অজান্তেই।
স্বপ্ন মনে হচ্ছে? সিনেমার মত ভাবা এটা একবারেই নয়, মালদ্বীপ আপনাকে এমন অভিজ্ঞতা নেয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। বিশ্বের এই প্রথম মালদ্বীপ সাগরের নিচে চালু হয়েছে আবাসিক হোটেল। কনরাড মালদ্বীপ রাঙ্গালি দ্বীপে এই হোটেল চালু করা হয়েছে।
দোতলা হোটেলটির নিচতলার উচ্চতা ১৬ ফুট পানির নিচে। এতে শোবার ঘর, বাসস্থান, বাথরুম আছে, এর নাম দেয়া হয়েছে মুরাকা। মালদ্বীপের ধিভেহী ভাষায় যার অর্থ কোরাল। মুরাকা তৈরী করতে খরচ হয়েছে দেড় কোটি মার্কিন ডলার (১২৫ কোটি ৭৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা) সেখানে সব মিলিয়ে ৯ জন অতিথি থাকা যাবে ৷
মুরাকায় বিছানার পাশাপাশি অন্যান্য হোটেল রুমের মতো বাকি সব সুবিধা রয়েছে। নিচ তলা থেকে দোতলা যাওয়ার জন্য রয়েছে আঁকাবাঁকা সিঁড়ি ৷ এছাড়া এর দ্বিতীয় তলায় রয়েছে বিশাল শোবার ঘর, বাথরুম প্রাইভেট জিম, একটি বার, ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মীদের ঘর, ইনফিনিটি পুলসহ আকর্ষণীয় সব সুবিধা।
এই হোটেলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকটি হলো- এখানে শুয়ে সাগরের নিচের অতুলনীয় দৃশ্য উপভোগ করা যাবে। হোটেলটির একটি অংশ পানির নিচে রাখা হলেও অপর অংশটি পানির ওপরে রাখা হয়েছে। এটা মূলত ‘বিশ্রাম নেয়ার ডেক’ হিসেবে বিবেচিত। এই জায়গায় এসে পর্যটকরা সূর্যের আলো পাবেন। রোমাঞ্চকর এই হোটেলে থাকতে খরচ কেমন পড়বে?
সিএনএনের প্রতিবেদন বলছে, মুরাকায় প্রতি রাত কাটাতে খরচ হবে ৫০ হাজার ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪২ লাখ টাকা। কিন্তু সমস্যা হলো এখানে একদিন থাকার কোনও সুযোগ নেই। এই হোটেলে থাকতে হলে চার রাতের একটি প্যাকেজ নিতে হবে যাতে খরচ হবে ২ লাখ ডলার বা ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
দাবি করা হচ্ছে বিশ্বের প্রথম বাণিজ্যিক আবাসিক হোটেল এটি ৷ এই প্যাকেজের আওতায় আপনার সাথে একজন রাঁধুনি থাকবে ও একটি ব্যক্তিগত নৌযান দেয়া হবে। যে এই প্যাকেজ নেবেন তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে হিলটন ডায়মন্ড স্ট্যাটাস পাবেন। পরিবেশগত দিকগুলো বিবেচনায় নিয়েই মুরাকা নির্মাণ করা হয়েছে। এর সবকিছুই তৈরি হয়েছে সিঙ্গাপুরে। তারপর একটি বিশেষ জাহাজে করে এগুলো মালদ্বীপ নিয়ে আসা হয়।