প্রবাস মেলা ডেস্ক: বাংলাদেশের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসা নীতিতে সর্বশেষ সাংবাদিক তথা গণমাধ্যমকর্মীদের বিরুদ্ধেও প্রয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতিবিদসহ কয়েকটি শ্রেণি পেশার ব্যক্তিদের ওপর ইতিমধ্যে ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের ঘোষণাও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই প্রসঙ্গটিই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন। পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে ওই ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এছাড়া ভিসা নীতি ঘোষণার অর্থ এই নয় যে, বাংলাদেশে আলাদা করে যুক্তরাষ্ট্র কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে।
ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক ভিসা বিধিনিষেধ প্রয়োগের খবরের পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়টি উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অবস্থান জানতে ম্যাথিউ মিলারের কাছে প্রশ্ন করেন।
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘যেমনটি আমরা আগেই বলেছি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন যখন গত মে মাসে এই নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছিলেন, এর উদ্দেশ্য নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনও পক্ষ নেওয়া নয়, বরং বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করা বা সমর্থন করা। গত শুক্রবার যখন আমরা এই নতুন ভিসা বিধিনিষেধগুলো ঘোষণা করেছিলাম তখনও আমরা উল্লেখ করেছি, এই নীতির মধ্যে – আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধীরাও অন্তর্ভুক্ত আছেন।’
আরেক প্রশ্নে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও মুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানতে চাইলে মিলার বলেন, ‘এটা নিয়ে আমার কোনও মন্তব্য নেই।’
গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ভিসা বিধিনিষেধে মিডিয়া ব্যক্তিত্বের অন্তর্ভুক্তির ঘোষণার বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা (ইতোমধ্যেই) যা বলেছি এবং কার জন্য এটি প্রযোজ্য হবে তা আমরা নির্দিষ্ট সদস্য বা নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের নাম ঘোষণা করিনি, কারণ মার্কিন ভিসার রেকর্ডগুলো গোপনীয় তথ্য। তবে এটি স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের জন্য এই নীতি প্রযোজ্য হবে।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে নির্বাচনের স্বার্থে গত মে মাসে নতুন ভিসা নীতির কথা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সেসময় টুইট করে এই ঘোষণা দেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে সেসময় জানানো হয়, বর্তমান এবং সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, সরকার-সমর্থক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, বিচারবিভাগ ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সদস্যরাও এর আওতায় পড়বেন। সাধারণত নির্বাচনের পরে এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কথা থাকলেও সর্বশেষ গত শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্তকারী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপে পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়েছে।