আখি সীমা কাওসার, রোম , ইতালি প্রতিনিধি: প্রতিবছরের মতো এবারও
বিশ্ব নারী দিবস নিয়ে মহিলা সমাজ কল্যাণ সমিতি ইতালির আয়োজনে
`জাগো নারী জাগো’ স্লোগানে উদযাপিত হলো বিশ্ব নারী দিবস । নীল রঙের শাড়ি পরা মহিলারা নানান সাজে সেজেছিল । রোমের তরপিনারতারায় স্থানীয় একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হলো বিশ্ব নারী দিবসের আলোচনা ও জাকজমকপূর্ণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রোম দূতাবাসের প্রথম সচিব সুফিয়া আক্তার । উক্ত অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় ছিলেন মহিলা সমাজ কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা শামিমা জামান ও তাহমিনা আক্তার। মহিলা সমাজ কল্যাণ সমিতির ৮ মার্চের এই জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদ শাহ্ তাইফুর রহমান ছোটন, নুরে আলম সিদ্দিকী বাচ্চু, হাসান ইকবালসহ রাজনৈতিক, সাংগঠনিক গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন ।

প্রধান অতিথির ভাষণে দূতাবাসের প্রথম সচিব সুফিয়া আক্তার বলেন, নারীরা আজ পিছিয়ে নেই, সারা বিশ্বে নারীরা আজ প্রধান প্রধান দায়িত্বে আছেন। নারী আজ প্রধানমন্ত্রী, নারী বিমান চালায়, নারী নাসার বড় বিজ্ঞানী, নারী কোথায় নেই ?নেতৃত্ব দিয়েছেন, নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমাদের দেশের দিকে নজর দিলে দেখা যায়- বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও কিন্তু একজন নারী, যিনি বাংলাদেশে চার চারবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন । বর্তমানে দক্ষতার সহিত সারা বিশ্বে নন্দিত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নারীদের উন্নয়নে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন নিরন্তর।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, নারীরা আজ ঘরে বসে নেই সারা পৃথিবীতেই নারীরা দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করছেন বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে। একজন নারী কি চায় ? একটু সম্মান স্বীকৃতি আর সমঅধিকার ? নারী প্রথমেই মা , তারপরে স্ত্রী ও পরে কন্যা সন্তান । ঘর থেকে যদি আমরা আমাদের কন্যাসন্তানটিকে সম্মান করি, ভালোবাসি তার পূর্ণ অধিকার মর্যাদার সহিতদিয়ে থাকি, স্ত্রীগণ যদি তাদের স্বামী থেকে ন্যূনতম ভালোবাসা টুকু, রেসপেক্ট এবং মর্যাদা পায় তাহলে ওই নারীর দুনিয়াতে আর কিছুই চাওয়ার থাকে না ।

সন্তানের কাছে মা-ও একজন নারী। সে মাকে যদি সন্তান বৃদ্ধবয়সে সম্মান করে ভালোবেসে আদর করে লালন পালন করেন তাহলে সে মায়েরো সন্তান লালন পালনের যত ত্যাগ-তিতিক্ষা মা করেছেন সেই সুখ নিয়ে মা মরে যেতেও শান্তি পান । তাই প্রতিটি নারী বক্তার মুখে একটি স্লোগান উচ্চারিত হয়েছে জাগো নারী জাগো জয় করা বিশ্বকে ।
কোন কোন বক্তার মুখে উচ্চারিত হয়েছে যে বিশ্ব নারী দিবস শুধু একদিনের জন্য পালন করা হয়, আমরা যদি নারীরা প্রতিদিন এই দিনটির মত সম্মান পেতাম ? অর্থাৎ এ রকম সম্মান যেন আমাদের মধ্যে সকল নারী সব সময় পেয়ে থাকেন এই প্রত্যাশাই সবাই করি। নারীরা আশা ব্যক্ত করেন সমাজের কাছে আর যেন পত্রপত্রিকায় নারী নির্যাতন নারী শিশু ধর্ষণ, নারীর অপমান যেন আমাদের চোখে না পড়ে, আমরা যেন পত্রপত্রিকায় এ ধরনের নিউজ আর না পাই সেই প্রত্যাশাই আমাদের সমাজের কাছে করি ।
অনুষ্ঠানে সবাই অনুরোধ করেন, আসুন আমরা আজ এই দিনে শপথ করি নারী আমাদের মা, নারী আমাদের স্ত্রী, নারী আমাদের কন্যা সন্তান, তাই নারীকে যথাযথ মর্যাদায় লালন পালন করি নারীকে ভালোবাসি, নারীকে সামাজিক অনৈতিক কাজ থেকে দূরে রাখি, এই হোক আমাদের আজকের শপথ ।
শেষে অন্যান্য বক্তাদের সাথে সমাপ্তি বক্তব্য রাখেন মহিলা সমাজ কল্যাণ সমিতির সভাপতি লায়লা শাহ্। তিনি তার বক্তব্যে পুরুষদের উদ্দেশ্য করে বলেন, স্ত্রীদের ভালোবাসুন। স্ত্রীদেরকে খুশি করতে অনেক দামী জিনিসের প্রয়োজন হয় না সুন্দর কিছু কথাবার্তা বা একটি ফুলই হতে পারে প্রতিদিনের সুখের সূচনা । সভাপতি লায়লা শাহ্ আরও বলেন, আমি নিজেও একজন নারী, আমার স্বামী আমাকে অনেক ভালোবাসে এবং আমার সকল কাজে তার সহায়তা আছে যার জন্য আজ আমি একজন নারী উদ্যোক্তা। আমি আমার এই মহিলা সমাজ কল্যাণ সমিতিতে সকল নারীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলতে চাই আসুন সকলে মিলে সমাজের অসঙ্গতি দূর করার চেষ্টা করি আর মিলেমিশে সুন্দর সমাজ গড়ার কাজ করি এই হোক নারী দিবসে নারীদের প্রত্যাশা আমাদের ।