প্রবাস মেলা ডেস্ক: ‘তুঝসে নারাজ নেহি জিন্দেগি, হ্যায়রান হু ম্যায়’ বা ‘মহারাজা তোমারে সেলাম’, অথবা নজরুলগীতি। তার কণ্ঠের জাদুতে মোহাবিষ্ট হয়েছেন শত সহস্র দর্শক। সবকিছুর অবসান ঘটিয়ে প্রয়াত হলেন বাংলার বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী ড. অনুপ ঘোষাল। শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতাও ছিল তার। অনুপ ঘোষালের প্রয়াণের খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাংলার সঙ্গীতমহলে। শোকপ্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নজরুলগীতির জন্যই সঙ্গীতজগতে সুনাম কুড়িয়েছিলেন অনুপ ঘোষাল। তবে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘হীরক রাজার দেশে’র মতো ছবিতে গানের সৌজন্যে তার কণ্ঠের খ্যাতি দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। গানগুলি আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
বাংলা গানের পাশাপাশ হিন্দিসহ নানা ভাষার চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন অনুপ। এর পাশাপাশি তপন সিনহা পরিচালিত ‘সাগিনা মাহাতো’ চলচ্চিত্রে তিনি প্রথমবার সঙ্গীত পরিচালক হিসাবে কাজ করেন। ১৯৮০ সালে সেরা গায়ক হিসাবে জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১১ সালে অনুপ ঘোষালকে ‘নজরুল স্মৃতি পুরস্কার’ ও ২০১৩ সালে ‘সঙ্গীত মহাসম্মান’ প্রদান করেছে। তবে হিন্দি সিনেমা ‘মাসুম’ ছবির গান ‘তুঝসে নারাজ নেহি জিন্দেগি’ আজও কেউ ভুলতে পারেননি।
বাম শাসনামলের শেষ দিকে ‘বদলা নয় বদল চাই’ শীর্ষক রাজনৈতিক স্লোগানে মমতার সঙ্গীও হয়েছিলেন। এরপর ২০১১ সালে প্রথমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতায় আসার দিনগুলোয় হুগলির উত্তরপাড়া বিধানসভা আসন থেকে ভোটে জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন অনুপ ঘোষাল।
তার প্রয়াণের খবর পাওয়া মাত্র শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সামাজিক যোগাযোগের প্লাটফর্মে লিখেছেন, অনুপ ঘোষালের প্রয়াণে সঙ্গীতজগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি অনুপ ঘোষালের আত্মীয়-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।