সালমান রহমান, হ্যানয়, ভিয়েতনাম: বাংলাদেশ দূতাবাস, হ্যানয়, ভিয়েতনাম-এ জাতীয় শোক দিবস ২০২০ এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় এবং ভাবগম্ভীর পরিবেশে স্মরণ করা হয়। দিবসটি স্মরণ ও পালন উপলক্ষে জাতীয় পতাকার আনুষ্ঠানিক উত্তোলন ও অর্ধনমিতকরণ, দোয়া ও প্রার্থনা, এক মিনিট নিরবতা পালন, বঙ্গবন্ধুর পোট্রেট-এ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও মোমবাতি প্রজ্জলন, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ, আলোচনা ও স্মরণ সভা এবং প্রামান্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
ভিয়েতনাম-এ নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত মিজ্ সামিনা নাজ দূতাবাস প্রাঙ্গণে প্রত্যুষে জাতীয় সঙ্গীত সহকারে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন এবং অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচীর সূচনা করেন। দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ এবং তাঁদের পরিবারবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
স্মরণ সভার প্রারম্ভে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যগণসহ অন্যান্য শহীদদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করা করা হয়। প্রার্থনা শেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয় । এরপর মান্যবর রাষ্ট্রদূত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এ দিবসটি উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে মান্যবর রাষ্ট্রদূত আগত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। মান্যবর রাষ্ট্রদূত শোক সভায় বিনম্র শ্রদ্ধাচিত্তে বঙ্গবন্ধুর স্মরণে আলোচনায় তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে শাহাদাৎবরণকারী তাঁর পরিবারের সদস্যসহ সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে জাতির জনকের জীবনাদর্শ এবং আমাদের স্বাধীনতা অর্জন সহ সকল সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্ব ও অপরিসীম আত্মত্যাগের কথা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন। জাতীয় শোক দিবসে তিনি শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করার মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’ গড়তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত ‘রুপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান। ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ-কে স্বল্পোনত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশ-এ উন্নীত হওয়ার অর্জনের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
স্মরণ সভার শেষ পর্বে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র ‘Bangabandhu – Forever in Our Heart’ প্রদর্শন করা হয়।
উল্লেখ্য যে, ভিয়েতনামে দ্বিতীয় দফা কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ভিয়েতনাম সরকার কর্তৃক কোভিড-১৯ মহামারীর সতর্কতার জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও জনসমাগম-এর উপর নিষেধাজ্ঞা থাকার জন্য দিবসটি দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পরিবারবর্গ-এর মাধ্যমে ‘ইন-হাউজ’ উদযাপিত হয়।