মনির আহমদ, সিঙ্গাপুর সিটি, সিঙ্গাপুর: বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ভাষাবর্ধিত সিঙ্গাপুরে
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হয়েছে। সিঙ্গাপুরের অধিবাসী ও অভিবাসীদের ভাষাবন্ধনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাইকমিশনারের শ্রম কাউন্সিলর মো. আতাউর রহমান। ২৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সিঙ্গাপুর লিটারেচার সিংলিট স্টেশনে এই আয়োজনের প্রাণ ছিল বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের মাতৃভাষায় কবিতা পাঠ, বই ও বর্ণমালার প্রদর্শনী।
শুরুতেই আমন্ত্রিতদের স্বাগত জানান সিঙ্গাপুরের কবি ও সাহিত্য সংগঠক জসুয়া ইপ্।
শ্রম কাউন্সিলর মো. আতাউর রহমান তার কথায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস ও গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “বাংলা ভাষার জন্য আত্মত্যাগের প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করেই ২০০০সাল থেকে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে।”
বাঙালিদের ভাষাসংগ্রাম ও জীবন দিয়ে মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের সেই ঐতিহাসিক ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসও তুলে ধরেন তিনি।
সিঙ্গাপুরের বাংলা আবৃত্তি সংগঠন ‘কহন’ উপস্থাপন করে ‘একটি ভাষার গল্প’ শিরোনামের কবিতাগুচ্ছ । মাজহারুল আবেদীন আদর ‘নুরুলদীনের কথা মনে পড়ে যায়’ কবিতা দিয়ে শুরু করেন আবৃত্তি, এরপরে আদর, জাকির হোসেন খোকন, তৌহিদা রহমান টিনা, বেলাল হাসান, ও মনির আহমদের কণ্ঠে যৌথভাবে আবৃত্তি হয় ‘একটি ভাষার গল্প’। বাঙালি কবিদের কবিতাংশের মেলবন্ধনে তুলে ধরা হয় বাংলা ভাষা আন্দোলন ও ভাষা বিজয়ের ইতিহাস।
অনুষ্ঠানে চাইনিজ ভাষায় কবিতা পাঠ করেন
কবি জুউ ডেকচিং ও ওয়ে হু, বার্মিজ ভাষায় পড়েন ওহেন তিন উয়েই ও খিং তাজিন সোয়ে, তামিল ভাষায় পড়েন হারিনি ভি, শ্রী মল্যানিংসিহ পড়েন ইন্দোনেশিয়ার বাহাসা ভাষায়,এবং তাগালগ ভাষায় কবিতা পড়েন বিং নাভোটা, মেইলিনি আনচিতা,
রোহনি ও রোলিন্ডা।
সিঙ্গাপুরের অভিবাসীদের সাহিত্য সংগঠন মাইগ্র্যান্ট রাইটার্স অফ সিঙ্গাপুর আয়োজিত “কার্নিভাল অফ পোয়েট্রি; ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাংগুয়েজ ডে সেলিব্রেশন” শিরোনামের এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ভাষাভাষীর কবিতার ইংরেজি অনুবাদ তুলে ধরা হয় প্রজেক্টেরে।
সংস্কৃত, বাংলা, তামিল, হিন্দি, বাহাসা, মান্দারিন, বার্মিজ, মালয়, ইংরেজি, ফিলিপিনোসহ বিভিন্ন ভাষার বর্ণমালার পোস্টার সাটা হয়েছিল সিংলিটের দেয়ালজুড়ে।
টেবিলজুড়ে ছিল বাঙালিদের প্রকাশিত বইয়ের সাথে চাইনিজ, বার্মিজ, ইন্দো, মালয়,ইংরেজি তামিল, গুজরাটি, ফিলিপিনোসহ বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত বই,
যার অধিকাংশ ছিল সিঙ্গাপুরে অবস্থিত বিভিন্ন ভাষাভাষী অভিবাসীদের প্রকাশিত।
এছাড়াও লেঙ্গুয়া সিঙ্গাপুরার পক্ষ থেকে ভাষা নিয়ে আলোচনা করেন হুয়ান তিং আং।
”ফুল, পাখি, প্রজাপতির সম্মেলনে একটি জনপদে যেভাবে বসন্ত নামে, পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষা ও ভাষা অলংকৃতের বন্ধনে যেন ভাষাবসন্ত নেমেছে এখানে।”
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এই আয়োজনকে আমন্ত্রিত অতিথিরা এভাবে বর্ণনা করেছেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম ও কল্যাণ সহকারী মো. আল আমিন হোসেন, কোলকাতার কবি ও অনুবাদক দেবব্রত বসু।